শনিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা
এমওটিএনের জরিপ

ভারতের শীর্ষ জনপ্রিয় নেতা মোদি, বিরোধী প্রথম মুখ মমতা

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

কভিড মহামারি, নড়বড়ে অর্থনীতি, প্রতিবেশী চীনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা সর্বোপরি প্রায় এক বছর ধরে দিল্লির বুকে কৃষক আন্দোলন- এত কিছুর মধ্যেও ভারতে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা হিসেবে মোদির আসন অটুট রয়েছে। তবে মোদিবিরোধী জোটের নেতৃত্বদানের সক্ষম ‘প্রথম মুখ’ বলে বিবেচিত হয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। ‘ইন্ডিয়া টুডে-সি ভোটার’-এর যৌথ উদ্যোগে করা ‘মুড অব দ্য নেশন’ (এমওটিএন)-এর একটি জরিপেই উঠে এসেছে এ তথ্য। দেশজুড়ে বিভিন্ন পেশার মানুষের ওপর জরিপ চালিয়ে প্রতি বছর দুবার- জানুয়ারি ও আগস্টে এ তথ্য সামনে আনে ইন্ডিয়া টুডে। ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে ফের দিল্লিতে ক্ষমতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদিই বিজেপির ট্রাম্প কার্ড বলে বিবেচিত হলেও এ জরিপে দেখা গেছে মোদির অন্যতম বিরোধী মুখ হিসেবে উঠে এসেছেন মমতা ব্যানার্জি। শতাংশের হিসাবে অনেক কম হলেও শতকরা ১৭ ভাগ মানুষের অভিমত- বিরোধী জোটকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে মমতা ব্যানার্জি সেরা, ১৬ শতাংশের পছন্দ অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ১১ শতাংশের রাহুল গান্ধী। তবে দেশে যদি এখনই সাধারণ (লোকসভা) নির্বাচন হয়, তাহলে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ পাবে ২৯৬টি আসন (সে ক্ষেত্রে ২০১৯ সালের নির্বাচনে প্রাপ্ত ৩৫২ আসন থেকে ৫৬টি কমবে) এবং বিজেপি এককভাবে পেতে পারে ২৭১ আসন। অন্যদিকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ পেতে পারে ১২৬ এবং অন্যরা ১২০টি আসন। জরিপে অংশ নেওয়া শতকরা ৫৮ শতাংশ মানুষ মোদি সরকারের কাজে অনেক বেশি সন্তুষ্ট বা মোটামুটি সন্তুষ্ট। যেখানে ২৬ শতাংশ মানুষ তার কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট নন। প্রায় ৬৩ শতাংশ মানুষের অভিমত- যে কোনো কাজে মোদির ব্যক্তিগত দক্ষতা অসাধারণ/ভালো। যদিও ২০২০ সালের আগস্টে করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় করা এমওটিএনের একটি জরিপে মোদির কাজকে সঠিক মনে করেছিল ৭৮ শতাংশ মানুষ। ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির ধারেকাছে কেউ নেই। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধী রয়েছেন ৪৬ শতাংশ পেছনে। জরিপে অংশ নেওয়া ৫২.৫ শতাংশ মানুষ যেখানে মোদিকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়, সেখানে মাত্র ৬.৮ শতাংশ মানুষ এ পদে রাহুলকে চায়। ভারতের পাঁচ রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর প্রদেশে নরেন্দ্র মোদির জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি বলে জরিপে উঠে এসেছে। জরিপে অংশ নেওয়া ৭৫ শতাংশ মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কাজে সন্তুষ্ট বলে মনে করে। অন্যদিকে মণিপুরে ৭৩, গোয়ায় ৬৭, উত্তরাখন্ডে ৫৯ ও পাঞ্জাবে ৩৭ শতাংশ মানুষ মোদির কাজকর্মে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। গোটা দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শীর্ষে আছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক। ওড়িশার ৭১.১ শতাংশ মানুষ তাঁর কাজে সন্তুষ্ট। দ্বিতীয় স্থানে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তাঁর কাজে সন্তুষ্ট ৬৯.৯ শতাংশ মানুষ, তৃতীয় স্থানে তামিলনাড়ুর এম কে স্টালিন। তাঁর কাজে সন্তুষ্ট ৬৭.৫ শতাংশ মানুষ। আগামী মে মাসে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আট বছর মেয়াদ পূর্ণ হবে নরেন্দ্র মোদির। তার আগে এ জরিপে মোদি সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হিসেবে উঠে এসেছে দুটি বিষয়- বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতি। শতকরা ২৪.৫ শতাংশ মানুষ মূল্যবৃদ্ধিকে সমস্যা মনে করছে। ১৩.৬ শতাংশ মানুষের কাছে বেকারত্ব, ১০.৩ শতাংশের কাছে কৃষক আন্দোলন, ৬.২ শতাংশের কাছে নোট বাতিল বড় সমস্যা মনে হয়েছে।

সর্বশেষ খবর