রবিবার, ২৯ মে, ২০২২ ০০:০০ টা
সোনালী ব্যাংক ইউকে

আতাউর রহমানের আমলেই ছিল সোনালি দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

যুক্তরাজ্যে ২০০১ সালে পৃথক ব্যাংক চালুর পর সোনালী ব্যাংক ইউকের সোনালি দিন ছিল আতাউর রহমান প্রধানের আমলেই। ২০১২ সালের মার্চ থেকে ২০১৫ সালের মে পর্যন্ত তিনি নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালনকালেই প্রতিষ্ঠানটি মুনাফার শীর্ষে ছিল। ওই সময় যুক্তরাজ্যের সোনালী ব্যাংক সব সূচকে উন্নতি করে।

জানা গেছে, সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড যুক্তরাজ্যভিত্তিক একমাত্র বাংলাদেশি ব্যাংক যার ৫১ শতাংশ শেয়ার মূলধন বাংলাদেশ সরকারের এবং অবশিষ্ট ৪৯ শতাংশ শেয়ার মূলধন  সোনালী ব্যাংকের। যুক্তরাজ্য সরকারের প্রুডেনশিয়াল রেগুলেশন অথরিটি দ্বারা অনুমোদিত এবং ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস অথরিটি ও প্রুডেনশিয়াল রেগুলেশন অথরিটি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ১৯৭৪ সালে এটি এক্সচেঞ্জ হাউস হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও পরে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং নীতি শাখার ২০০১ সালের ২৭ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নরের নিকট পাঠানো পত্রের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড নামে একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংক চালুর ব্যাপারে সরকারের সম্মতিপত্র পাঠানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০১ সালের ১০ ডিসেম্বর হতে যুক্তরাজ্যের মাটিতে সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেড একটি পরিপূর্ণ ব্যাংক হিসেবে এর ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করে।

সোনালী ব্যাংকের বর্তমান সিইও এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আতাউর রহমান প্রধান ২০১২ সালের মার্চ হতে ২০১৫ সালের মে পর্যন্ত সোনালী ব্যাংক (ইউকে) লিমিটেডের সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১২ সালের মার্চে তৎকালীন সিইও খন্দকার ইকবালের কাছ থেকে দায়িত্ব নেন। খন্দকার ইকবাল পরবর্তীতে বেসিক ব্যাংকের এমডির দায়িত্ব পান। আতাউর রহমান প্রধান ২০১৫ সালের মে মাসে এম সরোয়ার হোসেনের হাতে সোনালী ব্যাংকের (ইউকে) দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। সোনালী ব্যাংক (ইউকে) ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যবসায়িক সূচক এলসি অ্যাডভাইজিংয়ের সংখ্যা, ইমপোর্ট পেমেন্ট সংখ্যা, মুনাফার পরিমাণ বিবেচনায় নিলে দেখা যায়, আতাউর রহমান প্রধানের সিইও হিসেবে যোগদানের আগে অথবা পরে কেউই তার এই সাফল্যের নাগালে যেতে পারেননি। তিনি চলে আসার পর মুনাফা তো দূরের কথা বিজনেস পারফরম্যান্স কমে যাওয়ার কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয় ব্যাংকটি। ২০১১ সালে এর মুনাফার পরিমাণ ৫ লাখ ৭০ হাজার পাউন্ড হলেও ২০১২ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ১০ লাখ ২৭ হাজার পাউন্ড; যা তার আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। ২০১২ সালের এই পারফরম্যান্স ২০১৩ সালের ১৩ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিভিডেন্ট হস্তান্তর করা হয়। ২০১৪ সালে মুনাফার পরিমাণ ছিল ২৭ লাখ ২০ হাজার পাউন্ড। যদিও ১০ লাখ ৩৭ হাজার পাউন্ড প্রভিশন সংরক্ষণ করায় ইনকাম বেশি হলেও মুনাফা কিছুটা কমে আসে। বছর শেষে ইমপোর্ট পেমেন্টের সংখ্যা ছিল ২০ হাজার ৮৯৪টি, তা ২০১১ সালের ১০ হাজার ৩৬৩ এর দ্বিগুণের বেশি। অন্যদিকে ডিসেম্বরভিত্তিক পারফরম্যান্স মূল্যায়নে দেখা যায়, ২০১৫ সালে ১৫ লাখ ৩৩ হাজার পাউন্ড, ২০১৬ সালে ২ লাখ ৯৬ হাজার পাউন্ড, ২০১৭ সালে ১ লাখ ২৫ হাজার পাউন্ড লস করেছে ব্যাংকটি। মূলত আতাউর রহমান প্রধান বাংলাদেশে ফেরত আসার পর সোনালী ব্যাংক ইউকে লিমিটেড ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে চরম বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে থাকে।

ব্যাংকটিতে ওই সময়ে কর্মরত সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আতাউর রহমান প্রধানের সময়ে রেমিট্যান্স, এলসি অ্যাডভাইজিংয়ের সঙ্গে ট্রেড ফাইন্যান্স সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিজনেস যেমন- বিল ডিসকাউন্টিং, অ্যাড কনফারমেশন, রি-ইমবার্সমেন্ট বহুগুণ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হন। ফলে ওই সময়ে সোনালী ব্যাংক ইউকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। লোকাল কমিউনিটিসহ সরকারের কাছে ব্যাংকটির ভাবমূর্তি বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।

সর্বশেষ খবর