শিরোনাম
শনিবার, ১৮ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

হুমকিতে সিলেটের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা

৪ লাখ মানুষ অন্ধকারে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বন্যা পরিস্থিতির কারণে সিলেটের বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে যে কোনো সময় পুরো সিলেট শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সিলেটের ছাতক ও সুনামগঞ্জ গ্রিড উপকেন্দ্র পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এ কারণে বন্যাকবলিত প্রায় ৪ লাখ ৫৫ হাজার ৫০০ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুনামগঞ্জে ৩ লাখ ৮০ হাজার মানুষ এখন বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আছেন। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে আরও এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য মনিটরিং টিম গঠন করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বিদ্যুৎ গ্রাহকদের অনাকাক্সিক্ষত এই অসুবিধার জন্য গতকাল বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ামাত্র আবার বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে। বিষয়টি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জানা যায়, বন্যাকবলিত এলাকাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা সুনামগঞ্জের। সেখানে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার লাইন বন্ধ আছে। এ ছাড়া সিলেট-১ এবং সিলেট-২ সমিতির অধীনেও প্রায় সব লাইন বন্ধ। সব মিলিয়ে এখন প্রায় ৪ লাখ ৫৫ হাজার ৫শ লাইনের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে পানি উঠতে শুরু করে কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রে। গতকাল পানি বেড়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। এই উপকেন্দ্র থেকে পুরো সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়ে থাকে। কুমারগাঁও বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পানি ঢুকে পড়ার খবর পেয়ে গতকাল ছুটে যান সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বিউবো কর্মকর্তা ও প্রকৌশলীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চার পাশে বাঁধ দিয়ে সেচের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ নেন। এরপর বিদ্যুৎ কেন্দ্র রক্ষার কাজে নামে সেনাবাহিনী। বালু ও মাটিভর্তি বস্তা দিয়ে পানি আটকানো ও সেচ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আবদুল কাদির জানিয়েছেন, কুমারগাঁও থেকে বিভিন্ন সাবস্টেশনের মাধ্যমে পুরো সিলেট বিভাগে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ করে দিতে হবে। এতে পুরো সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। তবে সেনাবাহিনী ও সিটি করপোরেশনের সহযোগিতায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু রাখার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এদিকে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়ে ও তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বন্যা আক্রান্ত উপজেলাগুলোতে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

সর্বশেষ খবর