শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

সরকারকে একটু ধাক্কা দিতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

সরকারকে একটু ধাক্কা দিতে হবে

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারের প্রতি পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকারের পতনঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে। মির্জা ফখরুল গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তৃতা করছিলেন। ‘সরকারকে ফ্যাসিবাদী ও দুর্নীতিবাজ’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, এ সরকারকে একটা ধাক্কা দিতে হবে। নইলে মানুষ আলোর মুখ দেখবে না। তিনি বলেন, দেশে লোডশেডিং চলছে, বিদ্যুৎ নেই। আমাদের মা-বোনেরা আজ সমাবেশে হারিকেন নিয়ে এসেছেন। লোডশেডিংয়ে সবাইকে হারিকেন-মোমবাতি নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে। আর সময় নেই, এখনই জেগে উঠতে হবে।

বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তৃতা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক সালাম, বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন, বিএনপি নেতা আবদুস সালাম আজাদ, শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আনোয়ার হোসেন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, মহিলা দলের জেরিন খান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে দলের সাবেক মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম নীরব প্রমুখ।

নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হন। এর ফলে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং মৎস্য ভবন থেকে শিক্ষা ভবন পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সেখানে বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে। এ সময় দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার সদ্যপ্রয়াত সম্পাদক অমিত হাবিবের জানাজার নামাজের জন্য সমাবেশের কার্যক্রম কিছুক্ষণ স্থগিত রাখা হয়। বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকার বিদ্যুতের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাঠিয়েছে। ২০২১ থেকে ২০২২ সালে শুধু বিদ্যুৎ খাতে লোকসান হয়েছে ২৮ হাজার কোটি টাকা। অন্যান্য বছর মিলিয়ে এই লোকসান ছাড়িয়ে গেছে লাখ-কোটি টাকা। কারা এই টাকাগুলো নিয়েছে? ফখরুল বলেন, সামিট গ্রুপ ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ এক বছরে ৯ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা নিয়ে গেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন করে না, বিদ্যুৎ দেয় না। কিন্তু ক্যাপাসিটি চার্জের টাকা নিয়ে চলে যায়। আরেক দিকে রয়েছে ন্যাশনাল, ৬ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা। এ ছাড়াও দ্য পাওয়ার হোল্ডিং ৬ হাজার ৯২০ কোটি টাকা, ইউনাইটেড গ্রুপ ৪ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা, কেপিপিএল ৩ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এ রকম ১০টা কোম্পানি আওয়ামী লীগ ও সরকারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেই শত শত কোটি টাকা নিয়ে গেছে। মামলা না হওয়ার জন্য তারা ইনডেমনিটি আইন তৈরি করেছে। তিনি বলেন, এখন বিদ্যুৎ নেই, এরপর জ্বালানি তেল। এরপর দেখবেন রিজার্ভ শেষ হচ্ছে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এখন আর দফা-টফা নেই। এখন একটাই দাবি, এ মুহূর্তে সরকারকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে এই সংসদ বাতিল করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে জনগণের ক্ষমতা, জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর