শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

বাড়ি গাড়ি সোনাদানা কিছুই ছিল না পার্থর হলফনামায়

প্রতিদিন ডেস্ক

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সদ্য বরখাস্ত হওয়া মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, তার গাড়ি, বাড়ি, সোনাদানা কিছুই ছিল না। কিন্তু আর্থিক দুর্নীতি তদন্তের জন্য গড়া ইডি অভিযান চালিয়ে এর সব কিছুই পেয়েছে। সূত্র : আনন্দবাজার।

গত বুধবার দুপুর থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ইডি জানিয়েছে, অভিযানে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘বান্ধবী’ হিসেবে পরিচিত অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের একাধিক ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ প্রায় ৫০ কোটি রুপি। সোনা পাওয়া গেছে কয়েক শ ভরি। বিদেশি মুদ্রাও আছে। আর মিলছে একের পর বাড়ি ও ফ্ল্যাটের সন্ধান।

প্রশ্ন উঠেছে, এত রুপি আসলে কার? অর্পিতার দাবি, এগুলো সবই পার্থের। এদিকে ইডি এখনো এসব বিষয়ে খুব বেশি মুখ খুলছে না। বিভিন্ন সূত্রের খবর অনুযায়ী, জেরায় ইডি কর্মকর্তাদের কাছে অর্পিতা দাবি করেছেন, তার বাড়িতে কত রুপি রাখা আছে তিনি জানতেন না। পার্থের কর্মীরা এসে সেখানে রুপি রেখে দিতেন। শুধু তাই-ই নয়,  যেখানে এই রুপি রাখা হতো সেই ঘরে প্রবেশ করার এখতিয়ারও তার ছিল না। এই অভিযোগ আনার পরই তৈরি হয়েছে জল্পনা। প্রশ্ন উঠছে, এই রুপি কি সত্যিই পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থের? তবে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের সময় পার্থ নির্বাচন কমিশনের কাছে যে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন তার হিসাব বলে অন্য কথা। ২০২১ সালে বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রে দাঁড়ানো তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা পার্থ নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় জানিয়েছিলেন, তার হাতে নগদ রয়েছে ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬৭৬ রুপি। একই সঙ্গে স্থায়ী আমানত এবং সেভিংস অ্যাকাউন্ট মিলিয়ে দুটি ব্যাংকের চারটি শাখায় তার রয়েছে যথাক্রমে ২৪ লাখ ৮১ হাজার, ২৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৩৫, ১৫ লাখ ১ হাজার ১৬১ এবং ১ লাখ ৮ হাজার ৬৯ রুপি। নিজের নামে ২৫ লাখ রুপির একটি জীবনবীমা করা রয়েছে বলেও পার্থ হলফনামায় জানিয়েছিলেন। জীবনবীমা, ব্যাংকের আমানত মিলিয়ে তার সঞ্চিত অর্থ ৯০ লাখ ৯৪ হাজার ৮৬৩ রুপি! পাশাপাশি, পার্থ নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছিলেন, তার নিজস্ব একটিও গাড়ি নেই। পারিবারিক সূত্রে বা নিজস্ব উপার্জনে কেনা কোনো চাষের জমিও তার কাছে নেই। পার্থ জানিয়েছিলেন, পারিবারিক সূত্রে তার একটি বাড়ি রয়েছে। সেই বাড়ি নাকতলায়। নাম ‘বিজয়কেতন’। উল্লেখ্য, গত শনিবার ওই বাড়ি থেকেই ইডির হাতে গ্রেফতার হন পার্থ। দেড় কাঠা জমির ওপর ওই বাড়িটি পার্থ তার বাবার কাছ থেকে পেয়েছিলেন বলে হলফনামায় জানান। ওই বাড়ি তেরি হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। বাড়িটি তৈরি করতে খরচ হয়েছিল ৬ লাখ রুপি। যদিও ২০২১ সালের দাম অনুযায়ী, সেই বাড়ির মূল্য ২৫ লাখ রুপি। হলফনামা সে কথাই বলছে। সোনা-হীরা-প্ল্যাটিনামের মতো কোনো মূল্যবান অলঙ্কার তার কাছে নেই বলেও হলফনামায় দাবি করেছিলেন পার্থ। এ ছাড়া পার্থের জমা দেওয়া হলফনামা বলছে, তার নামে কোথাও কোনো ঋণ নেই। পাশাপাশি তিনি এ-ও জানিয়েছিলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে তার মোট উপার্জন ছিল ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৭২০ রুপি। হলফনামা অনুযায়ী, তার মোট অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৯০ লাখ ৯৪ হাজার ৮৬৩ রুপি। প্রসঙ্গত নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থের নাম জড়ানোর পর সম্প্রতি তাকে গ্রেফতার করে ইডি। তার বাড়ি থেকে বিশেষ কিছু উদ্ধার করা না গেলেও ইডির দাবি, ‘পার্থ-ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট মিলিয়ে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি রুপি।

সর্বশেষ খবর