শিরোনাম
বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
হাই কোর্টের প্রশ্ন

সুইস ব্যাংকে টাকা জমাকারীদের নাম-পদবি প্রকাশে ভয় কীসের

নিজস্ব প্রতিবেদক

সুইজারল্যান্ড বা সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যক্তিদের অর্থ রাখার বিষয়ে আদালতে দেওয়া প্রতিবেদনে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) প্রধানকে তলব করেছেন হাই কোর্ট। আজ তাকে আদালতে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ সময় আদালত বলেন, ‘নাম-পদবি ছাড়া এভাবে প্রতিবেদন দেওয়াটা যেন ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানির’ মতো একটা বিষয়। নাম-পদবি দিয়ে প্রতিবেদন জমা দিতে এত ভয় কেন, প্রশ্ন করেন হাই কোর্ট।

আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

পরে আইনজীবী খুরশিদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিবেদন ফরওয়ার্ডিং আকারে দিতে হয়। প্রতিবেদনে স্বাক্ষর দিতে হয় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে। কিন্তু বিএফআইইউর প্রতিবেদনে এসবের কিছুই নেই। আমি বলেছি এটি একটি উদাসীন প্রতিবেদন। এতে আদালত ভর্ৎসনা করেছেন এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কাল (আজ) বেলা ১১টায় বিএফআইইউর প্রধান মাসুদ বিশ্বাসকে হাজির হতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, আদালত যেভাবে চেয়েছিলেন বিএফআইইউ থেকে সেভাবে প্রতিবেদন দেওয়া হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রেসপন্স টু বাংলাদেশ ব্যাংক। আমরা আদালতে বলেছি, এটি তো রেসপন্স হয় না। এটি তো দুই বন্ধুর বিষয় না। এটি আদালতের আদেশ। তারা প্রতিবেদন দেবে। কিন্তু বিএফআইইউ বলেছে, জবাব। জবাব তো হবে না। এটি উনার লিখিত ব্যাখ্যা হবে। তাদের দাখিল জবাবে ঘাটতি আছে। এ কারণে আদালত তলব করেছেন। গত ১০ আগস্ট জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত ‘ডিকেব টক’ অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি শুয়ার্ড বলেন, সুইস ব্যাংকে জমা রাখা অর্থের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির জন্য তথ্য চায়নি। সুইস ব্যাংকের ত্রুটি সংশোধনে সুইজারল্যান্ড কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তবে আমি আপনাদের জানাতে চাই, সুইজারল্যান্ড কালো টাকা রাখার কোনো নিরাপদ ক্ষেত্র নয়।

সুইস রাষ্ট্রদূতের এ বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। পরদিন ১১ আগস্ট বিষয়টি নজরে নিয়ে সুইস ব্যাংকে অর্থ জমাকারীদের তথ্য কেন জানতে চাওয়া হয়নি তা রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানাতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেন হাই কোর্ট। এ বিষয়ে সুইস রাষ্ট্রদূতের দেওয়া বক্তব্য নিয়ে প্রকাশিত সংবাদের অনুলিপিও জমা দিতে বলা হয়। এরপর আদালতে দুদক এবং বিএফআইইউর পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ হলফনামা আকারে তথ্য জমা দেয়। ওই হলফনামায় যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় বিএফআইইউ প্রধানকে তলব করে আদেশ দেন আদালত।

 

সর্বশেষ খবর