বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বন্ধু এবং অংশীদার হতে পেরে ভারত খুবই গর্বিত। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের উন্নয়নের যাত্রায় শামিল হতে পেরে ভারত খুশি। এ মন্তব্য করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
গতকাল সন্ধ্যায় দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে বাংলাদেশ থেকে আগত যুবসমাজের প্রতিনিধিদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন মুর্মু।
তার অভিমত- ‘এই চেতনা রক্ষা করাটা আমাদের উভয় দেশের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ, যা আমাদের দুই দেশ ও দুই দেশের মানুষের মধ্যকার গভীর বন্ধুত্বকে অনুপ্রাণিত করে।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতা, উত্থান এবং অগ্রগতি গোটা বিশ্বের কাছে অনুপ্রেরণা বলেও মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, উত্থান এবং অগ্রগতি গোটা বিশ্বের কাছে অনুপ্রেরণা। বাংলাদেশের তরুণদের একটি অতীত আছে যা গৌরবে পূর্ণ এবং একটি ভবিষ্যৎ আছে যা প্রতিশ্রুতিতে পূর্ণ।’ ভারতীয় রাষ্ট্রপতির অভিমত- ‘প্রত্যেক ভারতবাসীর হৃদয়ে বাংলাদেশ একটা গভীর জায়গা করে নিয়েছে। আমাদের উভয় দেশই গভীর সভ্যতাগত সম্পর্ক ভাগাভাগি করে। শিল্প, সংগীত এবং সাহিত্যসহ বহু বিষয় আমরা আমাদের মধ্যে আদান-প্রদান করি।’ বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপনে ভারত সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে বলেও জানান ভারতীয় রাষ্ট্রপতি। মুর্মু জানান, ভারত এবং বাংলাদেশ উভয় দেশই যে এই সম্পর্কের বাহক আমাদের দুই দেশের গভীর সহযোগিতাই তা প্রমাণ করে। সম্প্রতি শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গটিও উত্থাপন করেন দ্রৌপদী মুর্মু। তিনি বলেন, ‘অতি সম্প্রতি দিল্লিতে এবং তারপরে লন্ডনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পেরে আমি আনন্দিত। আমাদের দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক যে কতটা অগ্রসর হয়েছে সেটা উল্লেখ করার বিষয়।’ ভারত এবং বাংলাদেশের জনসংখ্যার বেশির ভাগই যে যুবসমাজ- সেই দিকটিও তুলে ধরেন ভারতীয় রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘ভারতের জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি যুবপ্রজন্ম এবং বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানও আমাদের মতো। একটা বিরাট সংখ্যায় যুবসমাজ রয়েছে সে দেশে।’ তিনি বলেন, ‘দুই দেশেরই আগামী দিনের উদ্ভাবক, সৃষ্টিকর্তা, নির্মাতা এবং নেতা, উভয় দেশের যুবকদেরই গ্রিন এনার্জি, স্টার্টআপ, প্রযুক্তি, অর্থ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো অত্যাধুনিক ক্ষেত্রগুলোতে যুক্ত হতে হবে।’ দুই দেশের মধ্যে ইতোমধ্যে মানুষের যোগাযোগ রয়েছে, এই যোগাযোগ আরও বাড়াতে হবে এবং এ জন্য দুই দেশেরই যুবসমাজকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। বক্তব্যের শুরুতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমার বাংলাদেশি বন্ধুরা ভারতে আপনাদের স্বাগতম। আপনাদের সবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারাটা আমাকে খুব আনন্দ দিয়েছে। এই ইউথ প্রোগ্রামে আপনারা নির্বাচিত হয়েছেন বলে আমি আপনাদের অভিনন্দন জানাই। করোনা অতিমারির কারণে গত দুই বছর এই অনুষ্ঠান বন্ধ থাকার পর ফের এ বছর তা চালু হওয়ায় আমি আনন্দিত।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আপনারা সবাই বাংলাদেশের ভবিষ্যতের নেতা। আমি খুবই আশাবাদী যে, আগামী ভবিষ্যতে ভারত এবং বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে আপনারা একটা বড় ভূমিকা পালন করবেন। আপনারা শুধু আপনার দেশেরই ভবিষ্যতের অভিভাবকই নন, এই দুই দেশের অদ্বিতীয় সম্পর্কেরও অভিভাবক।’