শনিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

একই পরিবারের আটজনকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা

শেরপুর ও নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে একই পরিবারের আটজনকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম সমেশ্চুড়া গ্রামের জোড়ার পাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে রাতে ১৫ জনকে আসামি করে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন জালাল উদ্দিনের ছেলে আবদুর রশিদ। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে আটক করে গতকাল আদালতে পাঠিয়েছে। আটকরা হলেন- আমিনুল ইসলাম (৩৫), ছামিদুল ইসলাম (২০) ও ইবনে সাউদ (৫৫)। আহতরা হলেন- জালাল উদ্দিন (৬৫), তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৫০), মেয়ে জামেনা খাতুন (৩৩), ছেলে আ. রশিদ (৩৮), মনির হোসেন (২৫), এরশাদ আলী (২২), ছেলে রশিদের স্ত্রী শাহনাজ বেগম (৩০), ছেলে মনিরের গর্ভবতী স্ত্রী মর্জিনা বেগম (২২)। আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও দুজনকে শেরপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য দুজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, অর্পিত ছয় শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল জালাল উদ্দিন ও প্রতিবেশী নই মিয়ার মধ্যে। নই মিয়া দাবি করে আসছিলেন ছয় শতাংশ অর্পিত জমি জালাল উদ্দিন জোর করে ভোগদখল করছেন। এ নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও থানায় কয়েক দফা সালিশ হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। নই মিয়ার ছেলে শফিকুলের দেওয়া একটি মামলায় হাজিরা দেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার জালাল উদ্দিন তার পরিবারের আটজনকে নিয়ে শেরপুর কোর্টে যান। এই সুযোগে নই মিয়া, তার ছেলে শফিকুল, সোহানসহ স্থানীয় ও পাশের ঝিনাইগাতী উপজেলার ৩০-৪০ জন লোক নিয়ে জালাল উদ্দিনের ভোগদখলের জমিতে ঘর তুলতে থাকে। জালাল উদ্দিন শেরপুর কোর্টে হাজিরা দিয়ে বাড়ি এসে ঘর তোলার কারণ জানতে চাইলে নই মিয়ার লোকজন দেশি অস্ত্র দিয়ে জালাল উদ্দিনের পরিবারের ওপর হামলা চালায়। এতে জালাল উদ্দিনসহ তার পরিবারের আটজন গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তার মেয়ের স্বামী আন্তাজ আলী তাদের নালিতাবাড়ী হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীদের মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়ায় চারজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও দুজনকে শেরপুর সদর হাসপাতালে পাঠান।

জালাল উদ্দিনের ছেলে মন্জুরুল ইসলাম (২৮) বলেন, আমরা ভূমিহীন, আমাদের নিজস্ব কোনো জমিজমা নেই। স্থানীয় সমেশ্চুড়া মৌজার ২১৪ দাগের ৬ শতাংশ জমিসহ জোড়ার কিছু সরকারি জমিতে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে বাড়িঘর করে বসবাস করে আসছি। নই মিয়া ও তার দলবল আমাদের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার ষড়যন্ত্র করে আসছেন। বৃহস্পতিবার থেকে ওতপেতে থাকা নই মিয়া তার লোকজন নিয়ে আমার বৃদ্ধ বাবা, মা, ভাই, বোন ও ভাবিদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর জখম করেছেন। আমরা তাদের বিচার চাই। নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মো. আবদুল লতিফ বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। রাতেই তিনজনকে আটক করা হয়েছে। ওই এলাকায় অন্য আসামিদের ধরার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর