শনিবার, ১২ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

আইএমএফের ঋণ পাওয়ায় গাত্রদাহ হচ্ছে বিএনপির : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার আশ্বাসে সরকার ডুগডুগি বাজাচ্ছে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তাদের গাত্রদাহের কারণ হলো আইএমএফ বাংলাদেশকে কেন ঋণ দিচ্ছে। তিনি প্রশ্ন রাখেন, মির্জা ফখরুল কি ভুলে গেছেন, বিএনপির সময় জাতীয় অর্থনীতি পরিচালিতই হতো বৈদেশিক সহায়তা ও ঋণের ওপর ভিত্তি করে? গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা মহামারির মধ্যেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী এক চরম অর্থনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে যে অর্থনৈতিক সংকট প্রতীয়মান হচ্ছে, তা একটি বৈশ্বিক সংকট। এ সংকটের অভিঘাতে জর্জরিত হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। কারণ বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপ নয়। এ সংকট মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার মধ্য দিয়ে দেশের মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকার সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার আইএমএফ থেকে ঋণ নিচ্ছে। তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব আইএমএফের ঋণ নিয়ে অবান্তর মন্তব্য করেছেন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রশ্ন তুলেছেন। অথচ ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি গড়ে জাতীয় আয়ের ২৮ শতাংশ ঋণ নিয়ে দেশ পরিচালনা করেছে; তাদের সময় রিজার্ভ ছিল সাড়ে ৩ বিলিয়নেরও কম। তাদের সর্বশেষ বাজেট ছিল মাত্র ৬৯ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। আইএমএফের ঋণ ও রিজার্ভ নিয়ে কথা বলে বিএনপি জনমনে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করছে অভিযোগ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে এক যুগের বেশি সময় ধরে ধারাবাহিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির কারণে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের পরও বৈদেশিক ঋণের নির্ভরতা বহুলাংশে কমেছে। রিজার্ভ ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলার এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮.২ শতাংশ ছুঁয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান বাজেট বিএনপির সর্বশেষ বাজেটের তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আইএমএফের ঋণ পাওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতির সক্ষমতা আরও একবার প্রমাণিত হলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, চলমান বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। এডিবি সুস্পষ্টভাবে বলেছে, ‘শ্রীলঙ্কার মতো হবে না বাংলাদেশ’। বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য আছে বলেই আইএমএফ ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে। যার মধ্য দিয়ে আরও একবার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা প্রমাণিত হয়েছে। অথচ বিএনপির সময় অর্থনৈতিক সক্ষমতা বলতে কিছুই ছিল না। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরনির্ভরতার সেই সংকট থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উত্তরণ ঘটেছে; আইএমএফের এ ঋণ জনগণের জন্য বোঝা না হয়ে সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, চলমান বৈশ্বিক সংকটের ভয়াবহ অভিঘাত থেকে দেশের মানুষকে সুরক্ষা দিতে প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও দেশপ্রেমিক নাগরিকের দায়িত্বশীল আচরণ এবং কর্তব্যপরায়ণতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর