রবিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কারাগারে বজলু মামলার তদন্ত চাইবে র‌্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

গ্রেফতারের পর কারাগারে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়া বস্তির শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদকসম্রাট বজলুর রহমান বজলু। শুক্রবার গ্রেফতারের পর গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রূপগঞ্জ থানায় বজলুকে হস্তান্তর করে র‌্যাব। পরে অস্ত্র, মাদক ও জাল নোটের পৃথক তিনটি মামলায় সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন করে তাকে আদালতের পাঠান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। তবে শুনানি না হওয়ায় আদালতের নির্দেশেই তাকে কারাগারে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা রূপগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক আবদুর রশীদ। অন্যদিকে অস্ত্র ও মাদক মামলার তদন্তের দায়িত্ব চেয়ে আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করবে র‌্যাব। র‌্যাব বলছে, গ্রেফতারের পর বজলুর বিষয়ে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য আসছে। মাদকের পাশাপাশি তিনি দীর্ঘদিন ধরে জাল রুপি ও অস্ত্রের ব্যবসাও করে আসছেন। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে হত্যায় মদদ, চাঁদাবাজি, কিশোর গ্যাং পরিচালনা, ধর্ষণ ও পতিতালয় পরিচালনার অভিযোগ পাচ্ছে র‌্যাব। গতকাল এ বিষয়ে র‌্যাব-১ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গ্রেফতারের সময় বজলুর কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, ৫ রাউন্ড গুলি, ২২০ গ্রাম হেরোইন, একটি মোবাইল সেট, ভারতীয় ২৫ হাজার জাল রুপি, ৭৫ হাজার জাল টাকা এবং মাদক বিক্রির নগদ ২১ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। র‌্যাব-১ অধিনায়ক কর্নেল আবদুল্লাহ আল-মোমেন জানিয়েছেন, বজলুর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রমসহ বিভিন্ন অপরাধে এখন পর্যন্ত ২৩টি মামলার রেকর্ড পাওয়া গেছে। বজলু চনপাড়া বস্তি এলাকার মাদক কারবারের অন্যতম হোতা ও নিয়ন্ত্রক। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তার বেশ কয়েকজন অপকর্মের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। বজলু চনপাড়া বস্তিসহ আশপাশ এলাকার মাদক কারবারিদের কাছ থেকে মাসিক ভিত্তিতে টাকা তুলতেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন। এলাকার শীর্ষস্থানীয় পাঁচ-ছয়জন মাদক কারবারির প্রধান সমন্বয়ক ও গডফাদার ছিলেন বজলু। র?্যাবের তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, বস্তি এলাকার মাদকের প্রায় ২০০ স্পট থেকে কয়েকটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বজলু এই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে। বজলুর রহমান বজলু কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার। তিনি স্থানীয় উঠতি বয়সী ছেলেদের কাছে বজলু ভাই নামে পরিচিত। বিভিন্ন সোর্স তার ছত্রচ্ছায়ায় এলাকার ছেলেদের টাকা দিয়ে নানা অপকর্ম-হত্যা, মাদক বেচাকেনা, চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি দেখানো, কিশোর গ্যাং পরিচালনা, ধর্ষণ, যৌন হয়রানি ও পতিতালয় পরিচালনা করে। কেউ চাঁদা না দিলে তার ওপর নেমে আসে নির্যাতনের ভয়াবহতা। এসব আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত এক-দেড় বছরে নিহত হয়েছেন ছয়জন। ২৭ সেপ্টেম্বর অপরাধী গ্রেফতারে র‌্যাব চনপাড়া এলাকায় অভিযান চালালে বজলুর নির্দেশে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালিয়ে অপরাধী ছিনিয়ে নেওয়ারও অপচেষ্টা চালায়। রূপগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক আবদুর রশীদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অস্ত্র, মাদক ও জাল নোটের পৃথক তিনটি মামলায় বজলুকে সাত দিন করে ২১ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। তবে গতকাল সময় না থাকায় শুনানি হয়নি।

সর্বশেষ খবর