বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

শাহীনবাগে বিব্রত মার্কিন রাষ্ট্রদূত

উনি খুবই অসন্তুষ্ট হয়েছেন, তবে ওখানে যাওয়ার বিষয়টি সরকারকে জানানো হয়নি দেওয়া হবে বাড়তি নিরাপত্তা : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

শাহীনবাগে বিব্রত মার্কিন রাষ্ট্রদূত

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গতকাল সকালে গিয়েছিলেন ২০১৩ সালে গুম হওয়া বিএনপির নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের শাহীনবাগের বাসায়। প্রায় আধা ঘণ্টা তিনি সেখানে অবস্থান করেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের বাংলাদেশ ডেস্কের অফিসার লিকা জনসন। সাজেদুলের বোন সানজিদা ইসলাম বলেছেন, রাষ্ট্রদূত আমাদের বাসায় প্রবেশের ৪০ মিনিট আগে ‘মায়ের কান্না’ সংগঠনের লোকজন রাস্তার ওপর অবস্থান নেন। বাসা থেকে বেরিয়ে যখন তিনি গাড়িতে উঠছিলেন, তখন তারা কথা বলার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে হট্টগোলও হয়। পরে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থানাপুলিশ সদস্যদের সহায়তায় গাড়িতে উঠে চলে যান।

মার্কিন দূতাবাস সূত্র জানায়, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থাকায় বৈঠক শেষ না করে সেখান থেকে চলে যান পিটার হাস। রাষ্ট্রদূত বিষয়টি এরই মধ্যে তার সরকারের উচ্চপর্যায়ে জানিয়েছেন। হট্টগোলের পরে নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত তাৎক্ষণিক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ছুটে গিয়ে বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে। মার্কিন দূতের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, ‘হঠাৎ করেই জরুরিভিত্তিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতে উনি (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) বললেন, একটি বাসায় গিয়েছিলেন। সেখানে বাসার বাইরে অনেক লোক ছিল। তারা উনাকে কিছু একটা বলতে চাচ্ছে। উনার সিকিউরিটির লোকেরা উনাকে বলেছে- আপনি তাড়াতাড়ি এখান থেকে চলে যান। কারণ, ওরা (লোকগুলো) আপনার গাড়ি ব্লক করে দিবে। নিরাপত্তা অনিশ্চয়তায় তিনি (রাষ্ট্রদূত) তাড়াতাড়ি চলে গেছেন এবং এতে তিনি খুবই অসন্তুষ্ট হয়েছেন।’

আমি ওনাকে বললাম, ‘আপনার নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব আমাদের। আপনার ওপর বা আপনার লোকের ওপর কেউ কি আক্রমণ করেছে?’ উনি বললেন, ‘না। গাড়িতে হয়তো দাগ লেগেছে।’ আমি বললাম, ‘আপনি যদি অধিকতর নিরাপত্তা চান আমরা দেব। আপনি ওখানে গেছেন এ খবরটা কে প্রকাশ করল? আমি বা আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তো কিছুই জানি না। এই তথ্যটা লিক করল কে? উনি তার উত্তর দিতে পারেননি। আমরা আপনার নিরাপত্তা দেব, আপনি বরং বের করেন আপনার যাওয়ার তথ্যটা কে লিক করল, আপনার লোকেরাও তো করতে পারে। কিন্তু উনি একটু দুশ্চিন্তায় আছেন।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মিডিয়াকে আটকাতে পারব না। আমাদের মিডিয়া খুব সোচ্চার। যখনই কিছু হয়, তারা (মিডিয়া) এটার পিছনে লেগে থাকে। আপনি যদি চান আমি মিডিয়াকে ১০ বা ২০ ফুট দূরে রাখতে পারি। কিন্তু আমি মিডিয়াকে না করতে বা বাধা দিতে পারব না। আপনার ওখানে যে লোকজন গেছে, আমি তাদেরকেও বাধা দিতে পারব না। আমরা যেটা করতে পারি, আপনার প্রটেকশনের জন্য তাদেরকে দূরে রাখতে পারি। তারা তাদের বক্তব্যে ও মতামত দিবে, আমি তাদের বাধা দিতে পারব না। যদি আপনি বা আপনার লোকের ওপর কেউ আক্রমণ করে, পাবলিক ও প্রাইভেট প্রপার্টি কেউ যদি নষ্ট করে, তাহলে আমি তাদেরকে গ্রেফতার করতে পারব। এর বাইরে আমি কিছু করতে পারব না। আমরা আপনার প্রটেকশন অবশ্যই দেব।’

সর্বশেষ খবর