মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সতর্ক ও স্বতঃস্ফূর্ত হতে রাষ্ট্রদূতদের নির্দেশ

♦ ৮১ মিশনের সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক ♦ অপপ্রচার ঠেকাতে টেকনিক্যাল কমিটি

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

বিদেশে দায়িত্বরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের দেশবিরোধী অপপ্রচারের বিষয়ে সতর্ক ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বছরের প্রথম দিনে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা সব কূটনৈতিক মিশনের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন এ নির্দেশ দেন। অন্যদিকে, একই দিনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে এ ধরনের বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলার ক্ষেত্রে সমন্বয় করার জন্য আন্তমন্ত্রণালয় একটি টেকনিক্যাল কমিটিও করা হয়েছে। জানা যায়, গত রবিবার ভার্চুয়ালি বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও বিভিন্ন অনুবিভাগের মহাপরিচালকরা। দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের প্রতিনিধিরা বৈঠক করেন। সেখানেই টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। ওই কমিটির সমন্বয়কারী হবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ অনুবিভাগের মহাপরিচালক। এসব বৈঠকের বিষয়ে গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, টেকনিক্যাল কমিটির কাজ হবে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেলে তার সত্য-মিথ্যা যাচাই-বাছাই করা। কারণ বিভিন্ন সময় তথ্য পাওয়া যায়। সেগুলো যাচাই-বাছাই বিভিন্ন মন্ত্রণালয় করে থাকে। সেজন্যই এ কমিটির প্রয়োজন বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। আগেও এ ধরনের কমিটি ছিল। মাঝে অনেকদিন এ ধরনের কিছু ছিল না। আবার প্রয়োজন হওয়ায় নতুন করে করা হয়েছে। এটা শুধু অপপ্রচারই দেখবে না ভালো তথ্যও দেখবে। কমিটি শুধু কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে কাজ করবে না, এর পরিধি হবে বিস্তীর্ণ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নববর্ষের দিন আমাদের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। বিভিন্ন সময় কেউ কেউ মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে থাকে এ বিষয়ে সতর্ক ও স্বতঃস্ফূর্ত হতে বলেছি। এ ধরনের কোনো বিষয় দেখতে পারলে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার দিকে তাকিয়ে না থেকে দ্রত রেসপন্স করতে বলা হয়েছে। স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, মন্ত্রনালয়ের হুকুমের জন্য বসে না থেকে নিজেরাই ব্যবস্থা নেয়ার। প্রত্যেককে দ্বায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে বলা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, দূতাবাসগুলো এতদিন এ ধরনের  বিষয়ে নিজেরা কিছুই করতেন না। ভালো কিছু হলে জানাতেন, কিন্তু খারাপ কিছু হলে তারা জানাতে লজ্জা পেতেন, ব্যবস্থাও নিতেন না। এই পরিস্থিতি পাল্টে মন্ত্রনালয় ও দূতাবাসগুলোকে একটি টিম হয়ে সরাসরি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে বলেছি। রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী বছরের কর্মপরিকল্পনা ও গত বছরের অর্জন নিয়ে পর্যালোচনা করার জন্য বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে দিকনির্দেশনা রয়েছে তা নিয়ে রাষ্ট্রদূতদের বলেছি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ কীভাবে স্মার্ট হলো সে অভিজ্ঞতা জানাতে বলেছি। বাংলাদেশের সম্পদ কাজে লাগিয়ে বিনিয়োগের যে আহ্বান জানানো হয়েছিল, সে বিষয়ে গত বছর দূতাবাসগুলো কী কাজ করল তা নিয়ে জানতে চেয়েছি। কোন কোন দেশ কোন ধরনের দক্ষ জনশক্তি চায় তা জানানোর জন্য বলেছি। সেসব দেশের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে যোগাযোগের জন্য বলেছি। দূতাবাসে সেবার মান নিয়ে এখনো অভিযোগ আছে, সেগুলো বন্ধ করতে বলেছি। আঞ্চলিক শান্তি বজায় রাখার জন্য কী করা যায় তা জানাতে বলেছি। পাশাপাশি প্রবাসী দিবস ঘোষণার পর সব প্রবাসীকে একসূত্রে নিয়ে আসার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর