মঙ্গলবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
মার্কিন আদালতের আদেশ

রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধারে সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি) ও অন্য বিবাদীদের বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আপস করার নির্দেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালত। একই সঙ্গে বিবাদীদের ২০ দিন অথবা আগামী ২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতে জবাব দাখিল করার আদেশ প্রদান করেছেন স্টেট কোর্ট। ফলে রিজার্ভের চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধারের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট গতকাল এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটি জানায়, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি সাইবার হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক কোর্ট ফর দি সাউদার্ন ডিস্ট্রিক অব নিউইর্য়কে (ফেডারেল কোর্ট) আরসিবিসিসহ ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২০ মার্চ আরসিবিসি, লরিনজো ভি টান, ভিক্টর বি টান, ব্লুমবেরি (সোলাইর), ইস্টার্ন হাউয়াই, কিম অং বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলা ফেডারেল কোর্টে মোশন টু ডিসমিস (এই মামলা এই কোর্টে গ্রহণযোগ্য নয়) আবেদন করে। তারা যুক্তি দেয় এটা ফিলিপাইনের ঘটনা, মামলাও ফিলিপাইনে হবে। আদালত ব্লুমবেরি (সোলাইর) ও ইস্টার্ন হাউয়াই ক্যাসিনোর আবেদন গ্রহণ করে বলেছেন তাদের শুনানি এখানে হবে না। গত ১৩ জানুয়ারি আরসিবিসিসহ বাকি চারজনের পৃথক দুটি আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সুপ্রিম কোর্ট (স্টেট কোর্ট)। স্টেট কোর্ট বলেছেন, ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি) ও অন্যান্য চারজন বিবাদীর দায়েরকৃত মোশন টু ডিসমিস (এই মামলা এই কোর্টে গ্রহণযোগ্য নয়) আবেদন। ফলে উল্লিখিত বিবাদীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলা পরিচালনা করার ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা থাকল না। আদালতের রায়ে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির ক্ষেত্রে আরসিবিসির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যোগসাজশ ছিল। আরসিবিসির নিউইয়র্কের হিসাব ব্যবহার না হলে ফিলিপাইনে আরসিবিসি অভিযুক্তদের সহযোগিতা না করলে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে ওই অর্থ অন্য কোথাও যাওয়ার সুযোগ ছিল না। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে নিউইয়র্কের ব্যাংকে থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ১ হাজার ৬২৩ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১০ কোটি টাকা) চুরির ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ২ কোটি ডলার শ্রীলঙ্কা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি ৮ কোটি ডলারের বেশি ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংক হয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চলে যায়। ওই অর্থ এখনো ফেরত পায়নি বাংলাদেশ। সেই অর্থ উদ্ধারেই মামলা চলছে নিউইয়র্কের আদালতে।

 

সর্বশেষ খবর