রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

পুরনো সীমানায়ই সংসদ নির্বাচন

শুধু যুক্ত হবে নতুন উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদ

গোলাম রাব্বানী

একাদশ জাতীয় সংসদের সীমানা দিয়েই দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চলতি সপ্তাহের মধ্যে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত খসড়া প্রকাশ করার প্রাথমিক পরিকল্পনা নিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে একাদশ সংসদের সীমানাই বহাল রাখা হচ্ছে খসড়ায়। তবে নতুন উপজেলা, ইউনিয়ন পরিষদ শুধু সংশ্লিষ্ট আসনের সীমানার সঙ্গে যুক্ত হবে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, এবার আইন রক্ষার সীমানা নির্ধারণ হবে। কারণ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বলে দিয়েছে, জনশুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদন তারা দ্রুত দিতে পারছে না। তাই ইসি পুরান সীমানা বহাল রেখেই খড়সা প্রকাশ করতে যাচ্ছে। এদিকে বিদ্যমান সীমানা বহাল রেখে খসড়া প্রকাশ করলে ইসির সাংবিধানিক দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন হবে না বলে মনে করছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, সংসদীয় আসনের সীমানা সংকটের নিরসন দীর্ঘদিনেও হয়নি। বিগত কমিশনও সীমানা জটিলতা জিইয়ে রেখে বিদায় নিয়েছে। সীমানা জটিলতা নিয়ে অনেক মামলা-অভিযোগ জমা পড়েছিল। কিন্তু কিছুই আমলে নেয়নি তারা। অনেক এলাকার আসন পরিবর্তনের দাবি দীর্ঘদিনের। এখনো অনেক আসনের সীমানা ৯০ কিলোমিটার রয়েছে। তিন-চারটি উপজেলা নিয়েও রয়েছে একটি আসন। আবার একটি উপজেলা ও স্বল্প সংখ্যক ভোটার নিয়ে রয়েছে অনেক আসন। তারা বলছেন, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে যদি সীমানা জটিলতা নিরসন না করা হয় তবে নির্বাচন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। আর সীমানা জটিলতা নিরসন না করলে আসনভিত্তিক জনসংখ্যায় বেশি তারতম্য থাকলে সরকারের উন্নয়ন বরাদ্দ থেকে জনগণ বঞ্চিত হবে।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, নির্বাচন কমিশন আসনের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক অখণ্ডতাকে বেশি গুরুত্ব দেওয়ায় ১৫০টি আসন ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। কোনো কোনো আসনে জনসংখ্যার তারতম্য ২৫ শতাংশের বেশি। এ আসনগুলোর পরিবর্তন এসেছিল ২০০৮ সালে। পরে আসনের সীমানায় তেমন পরিবর্তন আসেনি।

কী হবে সীমানা জটিলতার : কুমিল্লা-১০ আসনের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ কিলোমিটার। নাঙ্গলকোট, সদর দক্ষিণ ও লালমাই উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসন। ভোটার সংখ্যা ৫ লাখের বেশি। এ আসনের সীমানা পরিবর্তনের দাবি দীর্ঘদিনের। মামলাও রয়েছে। শুধু কুমিল্লা-১০ আসন নয়, তিনটি উপজেলা নিয়ে গঠিত সুনামগঞ্জ-১ আসন। এ আসনে ধর্মপাশা, তাহিরপুর এবং জামালগঞ্জ উপজেলা; সিলেট-৩ আসন দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত। আবার ঠাকুরগাঁও-১ আসন গঠিত হয়েছে শুধু সদর উপজেলা নিয়ে। কিন্তু এ জেলার রানীশংকৈল উপজেলাকে ভেঙে ঠাকুরগাঁও-২ ও ৩ আসনে দেওয়া হয়েছে।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিদ্যমান সীমানায় ১৫০টি আসনে ভোটারের ভারসাম্য নেই। ৩৭টি আসনে আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা হয়নি। এক উপজেলাকে খণ্ড খণ্ড করে বিভিন্ন আসনে দেওয়া হয়েছে। ফলে একই উপজেলায় একাধিক সংসদ সদস্য থাকায় জনগণ অবহেলার শিকার হচ্ছেন। বিগত একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ৬৪ জেলার অধিকাংশ আসন নিয়েই পক্ষে-বিপক্ষে আবেদন করেছিলেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিকরাও ছিলেন আবেদনকারীর তালিকায়। তবে বিগত নির্বাচন কমিশন মাত্র ১২ জেলার ২৫টি আসনের সীমানা আংশিক পরিবর্তন করে।

সর্বশেষ খবর