বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
প্রতিনিধি দল টেকনাফে

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে হঠাৎ তোড়জোড় মিয়ানমারের

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকার পর রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি হিসেবে গতকাল কক্সবাজারের টেকনাফে এসেছে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল। তারা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চালাবে বলে জানা গেছে। ১৭ জনের প্রতিনিধি দলটি মিয়ানমারের রাখাইনের মংডু টাউনশিপ থেকে সকাল সোয়া ১০টায় স্পিডবোটে নাফ নদ পার হয়ে টেকনাফ ট্রানজিট জেটি ঘাটে এসে পৌঁছায়। এ সময় শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও বিজিবি কর্মকর্তারা তাদের স্বাগত জানান। এরপর বেলা ১১টা থেকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা টেকনাফ স্থলবন্দরের অভ্যন্তরে মালঞ্চ সম্মেলন কক্ষে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা ও তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের কাজ শুরু করে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিনিধি দল প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক এবং স্বদেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক কয়েকশ রোহিঙ্গার সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। তিনি আরও বলেন, প্রতিনিধি দলটি মিয়ানমারে ফিরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের তালিকা যাচাই-বাছাই করবে। এ ছাড়া তাদের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের কথাও রয়েছে। টেকনাফে আলোচনা করতে আসা কয়েকজন রোহিঙ্গা শরণার্থী নেতা জানিয়েছেন, প্রথমদিকে পরিবারভিত্তিক প্রত্যাবাসনের আওতায় ১ হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে বলে তারা জানতে পেরেছেন। এর মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের শখানেক রোহিঙ্গা রয়েছেন।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় জানায়, প্রত্যাবাসনের জন্য বাংলাদেশ ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমারের কাছে পাঠিয়েছে। ওই তালিকা থেকে প্রত্যাবাসনের জন্য প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ১৪০ জনকে বাছাই করা হয়। এর মধ্যে ৭১১ জন রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে দেশটির সম্মতি মিললেও বাকি ৪২৯ জনের ব্যাপারে দেশটির আপত্তি ছিল। মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলটি ওই ৪২৯ জন রোহিঙ্গার তথ্য যাচাইয়ের জন্য টেকনাফে এসেছেন।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে রোহিঙ্গা ঢলের শুরু হয়েছিল ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট। এরপর কয়েক মাসের মধ্যে সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের উখিয়া- টেকনাফে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে ওই এলাকার ক্যাম্পে বসবাস করছিল আরও ৪ লাখ রোহিঙ্গা।

সর্বশেষ খবর