স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়া খুনের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে নজরদারিতে রেখেছেন গোয়েন্দারা। হত্যাকান্ডের সম্ভাব্য তিনটি কারণ সামনে রেখেই চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি খতিয়ে দেখছেন তারা। তবে তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা এরই মধ্যে ইমতিয়াজকে ঢাকায় খুন করে লাশ মুন্সীগঞ্জে ফেলার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন।
ইমতিয়াজ হত্যার সম্ভাব্য তিনটি কারণ নিয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অ্যাপসভিত্তিক ব্যবসায়িক বিষয় নিয়ে কারও সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল ইমতিয়াজের। অথবা ভুল করেই হয়তো তিনি পেশাদার অপরাধী চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন। অথবা তাকে দিয়ে কোনো অন্যায় কাজ করাতে ব্যর্থ হয়েই খুন করা হয়েছে। নেপথ্য থেকে সায় দিয়েছেন নিহতেরই ঘনিষ্ঠ কেউ।
খুন হওয়া ইমতিয়াজ ঢাকার তেজগাঁওয়ের ডমিসাইল এলাকার মোহাম্মদ হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে। তার স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ৭ মার্চ বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি নিখোঁজ হন। এ নিয়ে ৮ মার্চ স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।হত্যার তদন্ত নিয়ে গতকাল কথা হয় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার মো. গোলাম সবুরের সঙ্গে। তিনি
বলেন, ‘এ ঘটনা নিয়ে কয়েকটি সংস্থা কাজ করছে। তবে আমাদের কিছু অগ্রগতি আছে। আরও কিছু অগ্রগতি হলে আপনাদের অবহিত করা হবে।’
জানা গেছে, খুনিরা নিহতের পূর্বপরিচিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে আগে থেকে তার একটা সম্পর্ক ছিল। তবে তিনি জানতেন না যে তাদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বিপদ হতে পারে। এমনকি খুন করা হতে পারে তাকে।
ইমতিয়াজের ছোট বোন ফৌজিয়া বলেন, ‘থানায় জিডি করে জীবিত তো দূরে থাক, ভাইয়ের লাশের খবরটি আমরা পাইনি। ৭ মার্চ ভাইয়ার বিবাহবার্ষিকী ছিল। সেদিন সন্ধ্যায় ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাওয়ার কথা ছিল। এ কারণে সেদিন একটি নকশা প্রিন্ট করার জন্য দুপুরে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকেই তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।’ নিহতের স্ত্রী ফাহমিদা আক্তার বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে কথা বলার সময় হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। তার দাবি খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। তাহলেই ইমতিয়াজের আত্মা শান্তি পাবে।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, ৮ মার্চ সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার মরিচের সেতু এলাকা থেকে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেখান থেকে লাশ উদ্ধারের পর তার পরিবারের খোঁজ চলে। এরপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার লাশ আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরদিন ৯ মার্চ বেওয়ারিশ হিসেবে মুন্সীগঞ্জ পৌর কবরস্থানে ইমতিয়াজের মৃতদেহ দাফন করা হয়। এরপর পরিবার জানতে পারে, লাশটি ঢাকা থেকে নিখোঁজ হওয়া স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়ার (৪৭)।