বৃহস্পতিবার, ৪ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন কোনো অবস্থাতেই বাতিল করা হবে না। তবে প্রয়োজনে কিছু সংশোধন করা যেতে পারে। গতকাল বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উদ্‌যাপনের ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ইউনেস্কো, আর্টিকেল নাইনটিন ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘শেপিং এ ফিউচার অব রাইটস’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন ইউনেস্কো ঢাকা কার্যালয়ের অফিসার ইনচার্জ সুসান ভিজ। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুয়েন লুইস। আইনমন্ত্রী বলেন, সময়ের প্রয়োজনে ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের পর প্রথম দিকে কিছু অপব্যবহার হয়েছে তা আমি ও আমার সরকার অস্বীকার করি না। তবে এটাও সত্য যে, এই অপব্যবহার এখন অনেকটাই কমে এসেছে। একটা সময়ে মনে হয়েছে আমরা এই আইনের সঠিক ব্যবহার করতে পারছি না। তাই আমরা একটি কমিটি গঠন করেছি। ইউএনএইচসিআর আমাদেরকে একটি টেকনিক্যাল পেপার দিয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে এবং সেটা আমরা পর্যালোচনা করছি। তারা এই আইনের কিছু ধারা বাতিল করতে বললেও আমাদের সে ব্যাপারে দ্বিমত রয়েছে। তবে সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনবোধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের চেষ্টা করা হবে। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা ছাড়া এর কোনো সমাধান হবে না। কারণ এই আইনের যথেচ্ছ ব্যবহার ও অপব্যবহার সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার পাশাপাশি মানুষের মৌলিক অধিকার হরণের হাতিয়ার হিসেবে প্রয়োগ হচ্ছে।

বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুয়েন লুইস বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে আমরা নিজেদের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছি। সাংবাদিকতা এমন একটি পেশা, যেখানে শুধু জনস্বার্থকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। এর সুরক্ষা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন বলেন, দেশে অনেকগুলো গণমাধ্যম থাকলেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়ে যায় না। তাই বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য গণমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে অবশ্যই কাজ করতে হবে।

ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যখন প্রণয়ন করা হলো, তখন বাংলাদেশে মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল এবং সেই যুদ্ধ শেষ হয় মেজর সিনহার মৃত্যুর মাধ্যমে। তখন এমন বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের আরও সংবাদ ছিল, তবে তা এই আইনের কারণে সামনে আসেনি। আমরা বলতে চাই, গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করার কিছু নেই, বরং গণমাধ্যমের কাজের সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সবার কাজ করতে হবে।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্দ্রা বার্জ ভন লিন্ডেসহ মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের (এমএফসি) অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাসহ দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

 

সর্বশেষ খবর