শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

শুকরিয়া, গ্রেনেড বোমার মুখোমুখি হয়েও বেঁচে আছি

নিজস্ব প্রতিবেদক

শুকরিয়া, গ্রেনেড বোমার মুখোমুখি হয়েও বেঁচে আছি

জাতিসংঘে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বীকৃতি পাওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া গ্রেনেড-বোমার মুখোমুখি হয়েও বেঁচে আছি, মানুষের সেবা করতে পারছি। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

দেশের জনগণকে ধন্যবাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ধন্যবাদ আমার দেশবাসীকে, তারা যদি বারবার ভোট না দিতেন, আর আমাকে সেবা করার সুযোগ না দিতেন আমি তো আসতে পারতাম না। আল্লাহর   কাছে শুকরিয়া, গ্রেনেড-বোমা-গুলি সবকিছুর মুখোমুখি হয়েও আমি বেঁচেও আছি এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারছি। এটাই সবচেয়ে বড় কথা।’ মঙ্গলবার সর্বসম্মতিক্রমে জাতিসংঘে কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক একটি রেজুলেশন গৃহীত হয়েছে। এতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবন ‘কমিউনিটি ক্লিনিক’কে বৈশ্বিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং বাংলাদেশের প্রশংসা করা হয়েছে। জাতিসংঘের ৭০টি সদস্যরাষ্ট্র এ রেজুলেশনটি কো-স্পন্সর করে। রেজুলেশনটির শিরোনাম ছিল ‘কমিউনিটিভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা : সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বাংলাদেশের প্রস্তাবিত এ রেজুলেশন কো-স্পন্সর করা দেশগুলোকে ধন্যবাদ দেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অভিজ্ঞতা আমরা সবার সঙ্গে শেয়ার করব। অনেক দেশ এভাবে স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারেনি, তাদের সঙ্গে শেয়ার করব। চিকিৎসাসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়াই সবচেয়ে বড় কথা।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের কমিউনিটি ক্লিনিকের ধারণা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে এ ক্লিনিক থেকে সেবা নিয়ে রোগীরা নৌকায় ভোট দেবে এমন ধারণা থেকেই বিএনপি কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তৃণমূলের মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতেই কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রচলন শুরু করে আওয়ামী লীগ। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে এটা বন্ধ করে দিল। তাদের বন্ধ করার যুক্তি হলো, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে মানুষ যদি চিকিৎসাসেবা নেয় তাহলে সবাই নৌকায় ভোট দেবে। তাদের কেউ ভোট দেবে না এ জন্য বন্ধ করে দিল। আমার খুব কষ্ট লাগল এ জন্য যে, আমরা যে ক্লিনিক করলাম সেখানে তো শুধু আওয়ামী লীগের লোক চিকিৎসা নেবে না। জনগণ সেবা পাবে। সাধারণ মানুষ সেবা পাবে। ওই সব এলাকায় অন্য দলের সমর্থক আছে না? তাহলে বন্ধ কেন করল?’ এ সময় কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন শুরুর কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা প্রায় ১১ হাজার ঘর করেছিলাম। তার মধ্যে প্রায় ৪ হাজার স্বাস্থ্য কেন্দ্র চালু করে দিলাম। চালু করার এক বছর পর আমরা একটা সার্ভে করলাম, এটা যে করে দিলাম রেজাল্ট কী আসে, মানুষ কতটুকু লাভবান হয়। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক থেকে শুরু করে অনেকে এগিয়ে এলো। এক বছর পর আমরা একটা জরিপ করলাম। তাতে দেখা গেল ৭০ শতাংশের ওপর এর সাফল্য। আমরা আরও উৎসাহিত হলাম যে ৪ হাজার চালুর পর, ১১ হাজার চালু করে দেওয়ার সব ব্যবস্থা করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পাঁচ বছর সময় শেষ।’ ভবিষ্যতে কমিউনিটি ক্লিনিক যাতে কেউ বন্ধ করতে না পারে সে জন্য ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে এটিকে একটি ট্রাস্টের আওতায় দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান। সরকারি হস্তক্ষেপে এ উদ্যোগ যাতে বন্ধ না হয়, তাই ট্রাস্টের মাধ্যমে কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালিত হচ্ছে। জনগণের অংশগ্রহণে পরিচালিত এসব ক্লিনিকের সেবার মান ভবিষ্যতে আরও উন্নত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

সর্বশেষ খবর