বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন বলেছেন, দেশে যত দিন ডলার সংকট থাকবে তত দিন লোডশেডিং চলবে। বিশেষ করে গরমকালে এ অবস্থার পরিবর্তন হবে না। ডলারের বিষয়টি আমাদের বিচলিত করে রেখেছে। ব্যাংকের কাছে মানুষ ডলার চাচ্ছে কিন্তু পাচ্ছে না।
গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে ড. ইজাজ হোসেন আরও বলেন, এ মুহূর্তে চলমান লোডশেডিংয়ে তৈরি হওয়া সংকটের সমাধান সেভাবে করা যাবে না। যদি সে অর্থে কোনো সমাধান থাকত সেটি সরকারের পক্ষ থেকেই সমাধানের চেষ্টা করা হতো। আপাতত ধারণা করছি সংকট কমাতে হলে কয়লা ঠিকমতো আসতে হবে। যদি কয়লা সময়মতো আসে তাহলে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র আবারও উৎপাদনে যাবে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে তখন ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাব। আবার ৯ জুনের পর দেশে বৃষ্টি হওয়ার কথা রয়েছে। বৃষ্টি হলে ৮০০ থেকে ১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাবে। দেশব্যাপী তীব্র গরম অনুভূত হওয়ায় গ্রাহক ফ্যান, ফ্রিজ ও এসির ব্যবহার বেশি করছে। পায়রা চালু হলে হয়তো লোডশেডিং একটু কমবে। আবার বৃষ্টি হলে বিদ্যুতের চাহিদা কমলে লোডশেডিং কিছুটা কমবে। অবস্থাটি অনেকটা এরকমভাবেই চলতে থাকবে।
তিনি বলেন, দুই বছর আগে আমরা যেরকম লোডশেডিংমুক্ত পরিবেশে অভ্যস্ত ছিলাম সে অবস্থায় আসতে হলে দেশে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা দরকার। আশা করব আমাদের ডলারের সংকট যেন মিটে যায়। এ সংকট না মিটলে লোডশেডিং মুক্ত করা যাবে না। আবার ডলারের সংকট খারাপ দিকেও যেতে পারে। আমাদের রিজার্ভও খুব টায় টায় অবস্থায় আছে। এটিও খারাপের দিকে যেতে পারে। আমাদের বিদ্যুৎ খাত আমদানিনির্ভর। আগে এ নির্ভরতা শুধু তেলে ছিল। নবায়নযোগ্য খাতে আশানুরূপ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছি না। আমরা এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিতে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের জন্য আলাদা ডলার রিজার্ভ রাখতে পারি। জ্বালানির দাম যখন কম থাকবে তখন অতিরিক্ত জ্বালানি কিনে তা মজুদ করতে পারি। আর এমনটি না করলে ভবিষ্যতে আবার এ ধরনের সংকটময় পরিস্থিতিতে পড়তে হবে।