কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে সম্প্রতি সংঘটিত সহিংসতায় যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত পুরো সড়ক এবং কাঁচপুর হয়ে সোনারগাঁ-মেঘনা পর্যন্ত ছিল রণক্ষেত্র। এতে রাজধানীর এই প্রবেশপথটি অচল হয়ে যায়। আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি সংঘর্ষ হয় এ এলাকায়। এর মধ্যে কাঁচপুর থেকে শনিরআখড়ায় হাজার হাজার বিএনপি-জামায়াত কর্মী অস্ত্র-লাঠি নিয়ে সড়ক দখল করে নেয়। তারা ঢাকায়ও প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধলে অন্তত দুজন পুলিশ সদস্য নিহত হন জামায়াতপন্থি অস্ত্রধারীদের হাতে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ থেকে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবালের নেতৃত্বে তিনজন নারী সাংবাদিক নির্যাতিত হন। নারায়ণগঞ্জ শহরের বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা করে পুড়িয়ে দেয় বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা। কাঁচপুরে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর বাণিজ্যিক ভবন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব কিছু ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের এসপির ব্যর্থতা ও তৎপরতার অভাবে। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার বিএনপি-জামায়াত কর্মীরা কাঁচপুর-যাত্রাবাড়ী সড়ক ব্যবহার করে ঢাকা প্রবেশের চেষ্টা করে। এখানে তাদের বাধা দিতে গিয়ে হতাহত হন ডিএমপির পুলিশ সদস্যরা। তারপরও নারায়ণগঞ্জের এসপির ভূমিকা ছিল রহস্যজনক।
চাটখিলের এমপি এইচ এম ইব্রাহিম জানান, গত ১৭ জুলাই আন্দোলন যখন পুরোপুরি শুরু হয়নি, তখন সেই সড়ক দিয়ে নোয়াখালী যাচ্ছিলেন তিনি। সেই মুহূর্তে তিনি দেখলেন, শনিরআখড়া সড়কে বিএনপি-জামায়াতের কিছু কর্মী লাঠি নিয়ে জড়ো হয়েছেন। এ সময় এমপি ইব্রাহিম ফোন করে নারায়ণগঞ্জের এসপিকে সার্বিক পরিস্থিতি জানান এবং বলেন, এখনই ব্যবস্থা নিলে তারা জমায়েত হতে পারবেন না। ঢাকা-চট্টগ্রাম রোড বন্ধ হবে না। তখন নারায়ণগঞ্জের এসপি ঔদ্ধত্যপূর্ণ ব্যবহার করেন এমপি ইব্রাহিমের সঙ্গে। একজন এমপিকে এসপি সাহেব বলেন, ‘আমি এসপি, আমি জানি কী করতে হবে। আপনারা রাজনীতিবিদরা ঘোড়ার ডিম জানেন!’ এমপি এইচ এম ইব্রাহিম আরও জানান, নারায়ণগঞ্জের এসপির বিষয়ে শামীম ওসমানসহ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের প্রশ্ন করলে জানা যাবে, এসপি বিএনপি-জামায়াত ঘেঁষা এবং তার কারণে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক দখলে ছিল বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীরা।