দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পূর্র্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। উৎপাদনে যাওয়ার দুই দিন পরেই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তৃতীয় ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে এর আগেই প্রথম ও দ্বিতীয় ইউনিটটি বন্ধ ছিল। জানা যায়, এর আগে এক মাস ছয় দিন বন্ধ থাকার পর ৬ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টা ১৭ মিনিট থেকে তৃতীয় ইউনিটে উৎপাদন শুরু হয়েছিল। এখান থেকে প্রতিদিন ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় এবং জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছিল। কিন্তু আবারও তা বন্ধ হলো। এ বিষয়ে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, প্রতিটি ইউনিটের জন্য দুটি করে ইলেকট্রো হাইড্রোলিক অয়েল পাম্প থকে; যা ওই ইউনিটের জ্বালানি হিসেবে তেল সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন কার্যক্রম সচল রাখে। কিন্তু ২০২২ সাল থেকেই তৃতীয় ইউনিটের দুটির মধ্যে একটি পাম্প নষ্ট হয়ে যায়। এরপর থেকে একটি পাম্প দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিল। কিন্তু ওই একটি পাম্পও সোমবার নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর দিনব্যাপী চেষ্টা করেও চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে উৎপাদন। বিষয়টি চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হারবিন ইন্টারন্যাশনালকে জানানো হয়েছে। তারা দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছে। চীন থেকে মেশিন এলেই উৎপাদন শুরু করা যাবে।
জানা যায়, ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতার বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট একই সঙ্গে কখনোই চালানো যায়নি। এর মধ্যে ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন সক্ষমতার ২ নম্বর ইউনিটটি ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে সংস্কার কাজের জন্য বন্ধ রয়েছে। এদিকে এই কেন্দ্রের ১২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন ১ নম্বর ইউনিটের সংস্কার কাজের জন্য ৬ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার পর বন্ধ করা হয়। বড়পুকুরিয়া তাপবিদুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন দিনাজপুরসহ উত্তরাঞ্চলের আট জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।