মাঠ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা বিভাগীয় কমিশনারদের সরকারের চাহিদা মোতাবেক আগামীর জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতি রাখার নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় কমিশনারদের সমন্বয় সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব-সচিবরা বিভাগীয় কমিশনারদের এ নির্দেশনা দেন। সমন্বয় সভার সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ। সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও সচিবরা অংশ নেন। সভায় অংশ নেওয়া একাধিক কর্মকর্তা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নাম প্রকাশ না করে এক বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আমাদের নিয়মিত বৈঠক হিসেবে যে ধরনের নির্দেশনা স্যাররা দেন সেসব আলোচনা হয়েছে। সরকার বিভিন্ন সংস্কার কমিশন গঠন করেছেন। আগামীর নির্বাচন নিয়ে মাঠ প্রশাসনে আমাদের যেন প্রস্তুতি থাকে সে বিষয়ে কথা বলেছেন। এ সরকার যখনই চাইবে প্রশাসন যেন প্রস্তুত থাকে সে নির্দেশনা দিয়েছেন বলেন ওই কর্মকর্তা। এ ছাড়াও কোনো সংস্কার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব থাকলে সেটিও দিতে বলেছেন বলেন তিনি। সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব অস্ত্র উদ্ধার গুরুত্ব দিয়ে করতে বলেন। সামনে যে ইস্যুগুলো আছে সেসব বিষয়ে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের চোখ কান খোলা রেখে কাজ করতে নির্দেশনা দেন। সভায় মোবাইল কোর্ট, চোরাচালানবিরোধী টাস্কফোর্সের কার্যক্রম, সারা দেশের অপরাধ কার্যক্রম তুলে ধরা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওই সভায় কৃষি বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়ে সংশ্লিষ্ট সচিব আলুর বীজ যেন সংকট না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে বলেছেন। সার সংকট যেন না হয় সতর্ক থাকতে বলেছেন।
এসব বিষয়ে মনিটরিং করতে বলেন। এ ছাড়াও শিক্ষার বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থিতিশীলতা যেন না থাকে। আগামীর এসএসসির পরীক্ষা যেন শতভাগ নকলমুক্ত হয় সে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দ্রুতই অ্যাডহক কমিটি করে দেওয়া হবে সে কথাও আলোচনা হয় সভায়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আলোচনার অংশ হিসেবে টিসিবির বিষয়ে আলোচনা হয় সভায়। টিসিবির কোনো উপকারভোগীর নাম পরিবর্তন করতে হলে দ্রুত যেন করা হয় সেটি বলেছেন। একই পরিবারে একাধিক টিসিবি কার্ড থাকলে এবং সত্যিকার অর্থে যদি তারা টিসিবির পণ্য পাওয়ার উপযোগী হয় তাহলে কার্ড পরিবর্তন প্রয়োজন হবে না বলেও বলা হয় সভায়। এর আগে বিভাগীয় কমিশনাররা জনপ্রশাসন, ভূমি মন্ত্রণালয়, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করেন। জনপ্রশাসনের বৈঠকে নাগরিক সেবা যেন বিলম্ব না হয়, দক্ষতা দিয়ে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার কথা বলেন। শূন্য পদ পূরণ, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা হয়। দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে আলোচনায় বলা হয়, সরকার যে বরাদ্দ দেয় সেটির দেখভাল করা এবং জেলা উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) দ্রুতই রদবদল শুরু হবে সে বিষয়েও কথা হয়। বিগত তিন বছরে সরকার যে ব্যয় করেছে সেটা যাচাইবাছাই করার কথাও নির্দেশনা দেয় ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে। আসন্ন শীতে মানুষ যেন কষ্ট না পায় সে বিষয়ে দ্রুতই বরাদ্দ দেবে মন্ত্রণালয় সে বিষয়ে এসব বরাদ্দ সঠিকভাবে বাস্তবায়নের কথা বলেন। ভূমি মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে ত্রুটিমুক্ত ডিজিটাল হোল্ডিং চালু করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়।