প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোয় যে প্রবল পরিবর্তন নিয়ে আসে সে পরিবর্তন আমাদের ন্যায়বিচার প্রদানের অগ্রাধিকার ও তা বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে। শুরু থেকেই স্পষ্ট হয়েছিল যে এ রাজনৈতিক রূপান্তর বিচারব্যবস্থার ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলেছে। তিনি আইনগত সহায়তা বিচারপ্রক্রিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মন্তব্য করেছেন বলেন, এটি পুলিশের তদন্ত, প্রসিকিউশন সার্ভিস, সরকারি কৌঁসুলি ও আদালতের সক্ষমতার মতো অন্যান্য উপাদানের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত। পেশাদার প্রসিকিউশন সার্ভিস গঠনের মাধ্যমে এর মধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। তাই ন্যায়বিচারকে জনগণকেন্দ্রিক করতে হলে আইনগত সহায়তা ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি বিচারব্যবস্থার মূল কেন্দ্রে থাকতে হবে।
রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল আয়োজিত ন্যাশনাল কনফারেন্স অন এডিআর : রোল অব ডিসট্রিক্ট লিগাল এইড কমিটিস (ডিএলেসিএস) ইন ইম্পলিমেন্টিং নিউ লেজেশলেশনস শীর্ষক জাতীয় কনফারেন্সে এ কথা বলেন তিনি। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) ও জাতীয় আইনগত সহায়তা পরিষেবা সংস্থার যৌথ উদ্যোগে এ কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার (NLASO) এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আজাদ সুবহানী। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ন্যায়বিচারকে জনগণকেন্দ্রিক করতে হলে আইনগত সহায়তা ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (ADR) বিচারব্যবস্থার মূল কেন্দ্রে থাকতে হবে। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় ধারণা করা হয়েছিল যে প্রধান বিচারপতির মূল দায়িত্ব হবে আইনের সূক্ষ্ম ব্যাখ্যা প্রদান ও প্রক্রিয়াগত জটিলতায় মনোযোগী হওয়া। কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। ২০২৪ সালের জুলাইয়ের রাজনৈতিক রূপান্তর বিচার ব্যবস্থার ওপরও গভীর প্রভাব ফেলেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত এক বছরে আইনগত সহায়তা খাতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার আনা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।