ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চলার মধ্যেই পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েল। গতকাল গাজা সিটিতে এ ঘটনা ঘটে। নিজেদের ২০ জীবিত জিম্মিকে ছাড়িয়ে নেওয়ার পরদিনই হত্যাযজ্ঞ চালাল ইসরায়েল। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তাদের নির্ধারিত কথিত ‘হলুদ সীমা’ অতিক্রম করায় পাঁচ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইসরায়েলি সেনারা একটি নির্দিষ্ট স্থানে সরে যায়। যেটিকে তারা ‘হলুদ সীমা’ হিসেবে অভিহিত করছে। তবে সাধারণ মানুষের জন্য বোঝার কোনো উপায় নেই এই সীমা কোথায়। দখলদারদের সেনারা জানিয়েছে, গাজা সিটির সেজায়া এলাকায় তাদের দিকে এগিয়ে আসে কিছু ফিলিস্তিনি। ওই সময় তাদের লক্ষ্য করে সরাসরি গুলি ছোড়া হয়। তারা দাবি করেছে, তাদের প্রথমে ভয়ভীতি দেখিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ওই ফিলিস্তিনিরা না সরায় গুলি ছোড়া হয়েছে। এসব ফিলিস্তিনিকে নিজেদের জন্য ‘হুমকি’ হিসেবে অভিহিত করেছে ইসরায়েলি সেনারা। কিন্তু তাদের কাছে অস্ত্র ছিল কি না সেটি নিশ্চিত করেনি দখলদাররা।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, গাজার বাসিন্দাদের আমাদের সেনাদের কাছে না আসার নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।
গত শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় গাজার যুদ্ধবিরতি। এর অংশ হিসেবে গতকাল ২০ জীবিত ও চার মৃত জিম্মির লাশ ফেরত দিয়েছে হামাস। অপরদিকে দখলদার ইসরায়েল ২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে। যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধ হবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু দুই দিন যেতে না যেতেই আবারও সেখানকার মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে দখলদাররা। যা যুদ্ধবিরতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
মিসরে গাজা শান্তিচুক্তি সই : হামাস-ইসরায়েল শান্তি পরিকল্পনা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার মিসরে আয়োজিত গাজা শান্তি সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতাদের উপস্থিতিতে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন তিনি। চুক্তির নথিতে ট্রাম্প ছাড়াও মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান এবং কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানিসহ আরও কয়েকজন বিশ্বনেতা স্বাক্ষর করেন। শান্তি সম্মেলনে প্রায় ৩৫ জন বিশ্বনেতা অংশ নেন। ট্রাম্প বলেন, যুদ্ধ-সহিংসতার ভয়াল সময় পেছনে ফেলে এসেছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। এখন সময় এসেছে এই ঐতিহাসিক উপত্যকা ভূখণ্ডকে পুনর্নির্মাণ ও পুনর্গঠন করার। ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনি উভয়ের জন্যেই আশীর্বাদ হয়ে এসেছে যুদ্ধবিরতি।