আওয়ামী লীগের জোটভুক্ত নয়, এমন বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো চলতি বছরেই ভোট করার পক্ষে মত দিয়েছে। তারা বলছে, প্রয়োজনীয় সংস্কারসহ এ নির্বাচনের জন্য এক বছর সময় যথেষ্ট। চাইলে সংস্কার শেষে আগামী ডিসেম্বরে ভোটের আয়োজন করতে পারে অন্তর্বর্তী সরকার। বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে কথা বলে এমন মনোভাব পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের জোটের বাইরে বাম দলগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের জাসদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মাকর্?সবাদী), বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগ, বাসদ (মার্কসবাদী), গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টিসহ দেড় ডজন বামপন্থি রাজনৈতিক দল। এর মধ্যে কিছু দল নিবন্ধিত, কয়েকটি রয়েছে নিবন্ধনের বাইরে। নিবন্ধন পাওয়া দলগুলো সামনে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘একতরফা’ ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন বর্জন করে এসব দল। বামপন্থি ওই রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা বলেন, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য করার জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন ততটুকু করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনের জন্য ২০২৫ সালই যথেষ্ট সময়। এর চেয়ে বেশি সময় নেওয়ার প্রয়োজন নেই। নির্বাচন যত দেরি হবে সংকট ততই বাড়বে। পরে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না। বাংলাদেশের জাসদ সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘সরকার দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার কথা বলেছে। আমরাও চাই দ্রুত নির্বাচন হোক। এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোও প্রস্তুতি নিক। সেজন্য চলতি বছরে ভোট হলে উভয়ই ভালো হবে বলে মনে করি।’ বামপন্থি নেতাদের মতে, নির্বাচনই শেষ কথা। তাই নির্বাচনই এ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য হতে হবে। পাশাপাশি নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করতে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার দাবি জানাচ্ছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য যাতে হয় সেজন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করা এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া এটা জনগণের দাবি। এটা আমরা বারবার বলে আসছি এ নির্বাচনের জন্য ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় যথেষ্ট। এর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সময়সীমা নির্ধারণ ও পদক্ষেপগুলো নিতে হবে।’ এ বিষয়ে বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, ‘সংবিধানে আছে সংসদ ভেঙে দেওয়ার তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন। সেটা তো আর সম্ভব হয়নি। এখন প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। এর জন্য একটা টাইম ফ্রেম দেওয়া দরকার। সরকার এখনো সেটা দিতে পারেনি। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এটা করতে হবে। প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ২০২৫ সালের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব বলে আমি মনে করি।’