প্রায় ৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ এবং ৩০১ কোটি টাকার অস্বাভাবিক ব্যাংক লেনদেনের অভিযোগে কুমিল্লা-৬ আসনের সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ ছাড়া তার স্ত্রী, তার ছেলে, মেয়ে এবং কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসীন বাহারের বিরুদ্ধেও পৃথক মামলা করেছে সংস্থাটি। সবমিলিয়ে এই পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হয়েছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এতথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। তিনি জানান, দুদকের অনুসন্ধানে বাহাউদ্দিনের পুরো পরিবারের মোট ৭৪ কোটি ৯৮ লাখ ৫৩ হাজার ৮৭৫ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ৩০১ কোটি ২৭ লাখ ৩৭ হাজার ৯৮ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অবৈধ সম্পদের মধ্যে দুই মেয়ে আয়মান বাহারের নামে ১ কোটি ৪৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও আজিজা বাহারের নামে ৬৫ লাখ ৫৫ হাজার ২২২ টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় তাদের নামে সম্পদের হিসাব চাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিকে দুদকের করা প্রথম মামলায় বলা হয়েছে, বাহাউদ্দিন বাহার কুমিল্লার এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৬৭ কোটি ৪৩ লাখ ১৩ হাজার ৮৩৬ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন এবং তার ২৯টি ব্যাংক হিসাবে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ২৫৮ কোটি ৬৮ লাখ ৬৩ হাজার ৯০৫ টাকা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
দ্বিতীয় মামলায় সাবেক মেয়র তাহসীন বাহারকে আসামি করা হয়েছে। তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের অসংগতিপূর্ণ ৩ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৭০ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। আর তার ১৬টি ব্যাংক হিসাবে ৪২ কোটি ৫৮ লাখ ৭৩ হাজার ১৯৩ টাকা লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তৃতীয় মামলায় আসামি হয়েছেন সাবেক এমপি বাহাউদ্দীন বাহার ও তার স্ত্রী মেহেরুন্নেসা। একজন গৃহিণী হয়ে তার স্বামীর অবৈধ সম্পদ বৈধ করার চেষ্টার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। তার বিরুদ্ধে ২ কোটি ৩৭ লাখ ৪৯ হাজার ৪৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। ক্ষমতা পট পরিবর্তনের পর আত্মগোপনে আছে বাহার পরিবার। গত ২৬ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলি ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বাহারকে প্রধান আসামি করে আদালতে একটি মামলা হয়েছে।