জেলার মুরাদনগরে পুলিশ হেফাজতে বিএনপি কর্মী শেখ জুয়েলের মৃত্যু হয়েছে। পরিবার ও দলের নেতাদের দাবি, তাঁকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে। উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে পুলিশের দাবি তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন। অসুস্থতায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবসায়ী শেখ জুয়েল (৪৫) বাঙ্গরা গ্রামের শেখবাড়ির মৃত শেখ গোলাম সারোয়ারের ছেলে। জুয়েলের স্ত্রী শিল্পী বেগম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকালে আমার স্বামী ইন্টারনেট বিল কালেকশন করতে যান। দুপুরের পরপরই খবর পাই তাঁকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। থানায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। অনেক অনুরোধ করে তাঁর সঙ্গে দেখা করি। সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় আমার স্বামী আমাকে বলেছেন “আমি কিছু করি নাই। আমাকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করো।” সন্ধ্যার পর খবর পাই তাঁকে মুরাদনগর হাসপাতালে নিয়ে গেছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি তিনি মৃত। পুলিশ আমার স্বামীকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে।’ জুয়েলের ছেলে শেখ সিহাব বলেন, ‘বিনা অপরাধে পুলিশ আমার বাবাকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলেছে। আমার বাবাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যাপারেও পুলিশ আমাকে কিছু জানায়নি। আমরা হাসপাতালে গিয়ে বাবাকে মৃত দেখতে পাই।’ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্মসম্পাদক কামাল উদ্দিন ভুইয়া বলেন, ‘শেখ জুয়েল আমাদের নিবেদিতপ্রাণ কর্মী। তাঁর ভাই শেখ শাহ পরান আমাদের ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। জুয়েলকে পুলিশ ধরে নিয়ে নির্যাতনে হত্যা করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ বিভিন্ন গণমাধ্যমে দাবি করেছে পাঁচজনের কাছে ৭০টি ইয়াবা পেয়েছে। এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? পুলিশ অদৃশ্য শক্তির সহযোগিতা নিয়ে মুরাদনগর বিএনপিকে ধ্বংসের চেষ্টা করছে। দায়ী পুলিশের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’ মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম মানিক বলেন, ‘রাত ৮টা ৫০ মিনিটে ভিকটিমকে পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমরা পরীক্ষানিরীক্ষা করে তাঁকে মৃত দেখতে পাই।’
এ ব্যাপারে বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘মাদক সেবনের সময় জুয়েলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, সে মাদকাসক্ত ছিল। পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে বিষয়টি সঠিক নয়। তাঁর বুকে ব্যথা শুরু হলে হাসপাতালে প্রেরণ করি। সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তে বিস্তারিত জানা যাবে।’