জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আর্ত মানবতার কল্যাণ-মুক্তিই আমাদের রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য। আমরা নেতিবাচক ধারার রাজনীতির পরিবর্তন করে দেশে ইতিবাচক ধারার রাজনীতি ফিরিয়ে আনার বিরামহীন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা দেশ ও জাতিকে এমন একটি সমাজ উপহার দিতে চাই, যে সমাজে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সব মানুষের অধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে। গতকাল রাজধানীর কাফরুল দক্ষিণ থানা জামায়াতের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ইব্রাহিমপুর, ব্রাঞ্চ-২ এ এ ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। থানা আমির অধ্যাপক আনোয়ারুল করিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মূসা। এ ছাড়া স্থানীয় জামায়াত নেতা-কর্মী ও চিকিৎসা গ্রহণে আগত সাধারণ রোগীরা উপস্থিত ছিলেন। অতীতে যারা রাষ্ট্রের সম্পদ লুণ্ঠন করে নিজেরা অর্থ-বিত্তের পাহাড় গড়েছে, জনগণকে তাদের হাতে ক্ষমতার চাবি তুলে না দেওয়ার আহ্বান জানান জামায়াত আমির। তিনি বলেন, রাষ্ট্র কারও সঙ্গে কোনোভাবেই বৈষম্যমূলক আচরণ করবে না। দেশ হবে দুর্নীতি, দুঃশাসন ও অপশাসনমুক্ত। আমরা যে প্রতিশ্রুতি পালনে পুরোপুরি সক্ষম, তা আমাদের দুজন মন্ত্রী সার্থকভাবে প্রমাণ করে গেছেন। তারা ছিলেন দুর্নীতিমুক্ত, সৎ, যোগ্য ও অধিকতর দক্ষ। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবেন বা যেতে চান তাদের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ ও আল্লাহর কাছে জবাবদিহির অনুভূতি নিয়ে সব কাজ সম্পাদন করতে হবে। জামায়াত আমির বলেন- আগামী নির্বাচনে জনগণ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারলে পাঁচ বছরেই বাংলাদেশ নতুন বাংলাদেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। দেশে নিজের জটিল চিকিৎসা গ্রহণের সিদ্ধান্তের কারণ জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, যারা অল্প কিছু হাঁচি-কাশি হলেও বিদেশে চিকিৎসার জন্য দৌড়ান, তার প্রতিবাদ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যে চিকিৎসা বাংলাদেশেই আছে, সেজন্য বিদেশে যাওয়া উচিত নয়। যারা দেশ গড়তে চান, তাদের বিদেশে চিকিৎসা নেওয়া মানায় না। যেদিন জটিল রোগের চিকিৎসা নিবেন, সেদিন চিকিৎসার ফাঁকফোকর বুঝতে পারবেন। আমি সেটাই বোঝার চেষ্টা করেছি এবং সংশ্লিষ্টদের তা বলে এসেছি। তিনি বলেন, আমরা এমন একটি মানবিক দেশ গড়তে চাই, যেখানে অধিকারের জন্য কারও কাছে হাত পাততে হবে না। শিক্ষা-স্বাস্থ্য সেবা সবার জন্য নিশ্চিত করা হবে। দেশে স্বাস্থ্যসেবা যে কাঙ্ক্ষিত মানের নেই তার প্রমাণ আজকের এই মেডিকেল ক্যাম্পে রোগীদের ব্যাপক উপস্থিতি। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা কথা দিলাম-এই সমাজ পরিচালনার দায়িত্ব যদি আমাদের হাতে দেন তাহলে আমরা তেলা মাথায় তেল দেব না। যে মাথায় তেল নেই সেখানেই দেওয়ার চেষ্টা করব। বঞ্চিত মানুষ হবে আমাদের অগ্রাধিকার। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবায় বঞ্চিতরা অগ্রাধিকার পাবে। জামায়াত আমির চিকিৎসার কারণে দীর্ঘ এক মাস এক সপ্তাহ পর এ ধরনের দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিলেন।