ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাষণের সময় দুই এমপি ‘ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিন’ লেখাসংবলিত কাগজ উঁচিয়ে ধরেন। এতে ট্রাম্পের বক্তৃতা সাময়িক বাধাগ্রস্ত হয়। পরে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ওই দুই এমপির হাতে থাকা কাগজ ছিনিয়ে নেন এবং পার্লামেন্ট ভবন থেকে তাদের দ্রুত বের করে নিয়ে যান। ওই দুই এমপি হলেন আইমান ওদেহ ও ওফের কাসিফ। দ্য টাইমস অব ইসরায়েল জানায়, আইমান ওদেহ ‘হাদাশ-তাল’ পার্টির চেয়ারম্যান। এটি মূলত আরব-ইসরায়েলিদের একটি দল। আর কাসিফ দলটির একমাত্র ইহুদি এমপি।
মিডল ইস্ট আই জানায়, পার্লামেন্ট থেকে বের করে দেওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্সে এক পোস্টে আইমান ওদেহ লিখেছেন, ‘তাদের কাছে আমার একটি মাত্র অপরাধ। আমি এমন একটি সহজ দাবি তুলেছি, যা সমগ্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মেনে নিয়েছে। তা হলো রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া। এই সহজ সত্য স্বীকার করতে বলায় আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ ওফের কাসিফও এক্সে এক পোস্ট লিখেছেন, ‘আমরা কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য আসিনি। আমরা ন্যায়ের দাবি নিয়ে এসেছিলাম। অবরোধ ও বর্ণবাদী শাসনের অবসান এবং ইসরায়েলের পাশে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবল প্রকৃত শান্তি সম্ভব। দখলদার ও রক্তপাতে আগ্রহী সরকারকে প্রতিহত করো।’
২০ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি : এদিকে ২০ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাস। গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় ভোরের দিকে প্রথমে সাতজন জিম্মিকে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা রেড ক্রসের জিম্মায় দেওয়া হয়। তার পর রেড ক্রস তাদের ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে। পরে দুপুরে অবশিষ্ট ১৩ জনকে মুক্তি দেয় হামাস। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।
মুক্তি পাওয়া জিম্মির সবাই পুরুষ। গত দুই বছরে কয়েকবার এ যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা চলেছে। সেসব চেষ্টার অংশ হিসেবে কয়েক দফা অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিও ঘোষণা করে ইসরায়েল। সেসব যুদ্ধবিরতির সময় বেশকিছু জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। তার পরও প্রায় ৪০ জন জিম্মি আটক ছিল তাদের হাতে। তবে কাগজে-কলমে ৪০ জন জিম্মি থাকলেও তাদের মধ্যে জীবিত ছিলেন ২০ জন।
১৯৬৮ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি : ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হাতে বিভিন্ন সময় আটক ১৯৬৮ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের কারা কর্তৃপক্ষ। গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে বন্দিদের স্থানান্তরিতও করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। ফিলিস্তিনি বন্দিদের দুটি দলে ভাগ করে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি দলকে ইসরায়েলের ওফের কারাগার থেকে বের করে অধিকৃত পশ্চিম তীরে স্থানান্তর করা হয়। আর দ্বিতীয় দলটিকে কেটজিওট কারাগার থেকে দক্ষিণ ইসরায়েলের কেরেম শালোমে স্থানান্তর করা হয়েছে, যেটি গাজার সীমান্ত ক্রসিংগুলোর মধ্যে একটি।
সূত্র : টাইমস অব ইসরায়েল মিডল ইস্ট আই