শুক্রবার, ৬ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
ঘরদোর

অন্দরের আড্ডাঘর

বাড়িতে উপস্থিত অতিথির নজরে প্রথমেই আসে বসার ঘর। তাই একে আলাদা একটু গুরুত্ব দিতেই হবে। বসার ঘরে চোখ বুলিয়েই আন্দাজ করা যাবে আপনার রুচি ও পুরো বাড়ির সাজসজ্জা।

মোহাম্মদ সুজন

অন্দরের আড্ডাঘর

আড্ডা- কার না ভালো লাগে! বাঙালির আড্ডা বসে যেখানে সেখানে। যেমন খেলার মাঠ, পাড়ার অলিগলি, চায়ের দোকান বা কফি শপ ইত্যাদিতে। আর বাড়িতে আড্ডায় মেতে উঠতে সাধারণত বেছে নেওয়া হয় বসার ঘরকে। সে ক্ষেত্রে অন্দরের বসার ঘরটিতে থাকতে হবে মজলিসি পরিবেশ। তাই স্বাভাবিকভাবেই অন্য ঘরগুলোর তুলনায় বসার ঘরটির সাজানোর প্রতি একটু বেশি মনোযোগ দিতে হয়। বসার ঘরের সৌন্দর্যের ওপর নির্ভর করে বাড়ির মানুষের রুচিবোধও।

 

আড্ডাঘরের মাপ বড় বা ছোট যাই হোক, খেয়াল রাখুন ঘরটি যেন হয় ঘরের কেন্দ্রবিন্দু। যেমন খোলা জানালা থাকলে বাইরের দৃশ্য দারুণ হলে ভালো। আবার ঘরের দেয়াল যদি রং করানো থাকে তবে চমৎকার কোনো পেইন্টিং ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার সোফাসেট, সঙ্গে একটা ছোটখাটো লাইব্রেরি থাকলে একেবারে মন্দ হবে না। দেয়ালে এলসিডি টেলিভিশন বা প্রজেক্টরের ব্যবস্থা এটুকুই যথেষ্ট। তবে ঘরের আকৃতি অনুযায়ী আসবাবপত্র নির্বাচন করা প্রয়োজন। আপনি যতটা জায়গাজুড়ে আসবাবপত্র রাখতে চান ততটা জায়গা মেপে আসবাপত্র বসিয়ে নিন। সেন্টার টেবিল বা সোফার হাতল, জানালার প্রান্ত বা ঘরের কোনো র‌্যাক সবই সমতল বানানোর চেষ্টা করুন। দেখতে ভালো লাগবে। ঘরের মাঝখানে কার্পেট পেতে দিন। আড্ডাঘরে বড় আকারের কার্পেট পাতা ভালো। এতে ঘর বড় আকারের মনে হবে।

 

একটু বুদ্ধি খাটালে বাড়ি বা ফ্ল্যাটের অতিরিক্ত ঘরকেও আড্ডাঘর বানিয়ে তোলা সম্ভব। ছাদের ঘরও আড্ডাঘরের জন্য বেশ ভালো। এ ঘরের মেঝে নিয়েও অন্যরকম ভাবনাচিন্তা চলতে পারে। সলিড কাঠের মেঝে বা উডেন ফ্লোরিং এমন ঘরে বেশ মানিয়ে যাবে। তবে সে ক্ষেত্রে আলো হবে পরিমিত ও রিফ্লেকটেড। সরাসরি আলোর উৎস যেন দেখা না যায়। খুবই অল্প আলোয় স্বপ্নপুরী হয়ে উঠবে আড্ডাঘর। তবে হ্যাঁ, এ কথাটা মনে রাখা দরকার, মজলিসি ঘরে যথেষ্ট আলোর ব্যবস্থা যেন থাকে। টেবিল ল্যাম্প, ফ্লোর ল্যাম্প, হ্যাংগিং লাইট দিয়ে খুব সুন্দর করে সাজাতে পারলে ঘর দেখতে দুর্দান্ত লাগবে। তা ছাড়া ঘরের সঙ্গের লাগোয়া বারান্দা বা ভেন্টিলেটর দিয়েও আলোর ব্যবস্থা হবে। যত বেশি আলো ঘর তত বেশি প্রাণবন্ত থাকবে। প্রয়োজনে সেগুলো জ্বালিয়ে নিতে হবে। অপ্রয়োজনে জ্বালাবেন না।

 

আড্ডাঘরে বইয়ের লাইব্রেরির পাশেই থাকবে পড়ার ব্যবস্থা-  স্টাডি টেবিল বা একটা আরামদায়ক চেয়ার থাকতে পারে। সঙ্গে রেখে দিন একটা ডাউন লাইট। সব আলো বন্ধ রেখে ডাউন লাইটের আলোয় বই পড়তে বেশ ভালোই লাগবে। তবে হ্যাঁ, এ ঘরের রংও রাখুন হালকা, যা চোখে লাগে না। ওয়ালপেপার ব্যবহার করলে তাতে নকশা রাখুন পাহাড়, সমুদ্র বা কোনো প্রাকৃতির নৈসর্গিক দৃশ্যের। কোনো শিল্পীকে দিয়ে আঁকিয়েও নিতে পারেন আপনার আড্ডাঘরের দেয়াল। এ ছাড়া স্মার্ট টিভি রাখা যেতেই পারে আড্ডাঘরে। ফলস সিলিংয়ে সারাউন্ডিং সাউন্ডের ব্যবস্থা করা থাকলে বেশ হয়। থ্রি ডি সিনেমার সঙ্গে ডিজিটাল সাউন্ড এফেক্টে শিশুরা কেন, বড়রাও আনন্দ পাবে। ইলেকট্রিশিয়ান ও আর্কিটেক্টের সাহায্যে মাল্টিপ্লেক্সের আনন্দও কিন্তু হাজির করা যেতে পারে আড্ডাঘরে। আড্ডায় চা বা কফি মাস্ট। আর সে চা যদি আড্ডা দিতে দিতেই নিজেরা তৈরি করে নেওয়া যায়, তাহলে তো কথাই নেই। একটা ইলেকট্রিক কেটলি ও চা করার সব সরঞ্জাম রেখে দেবেন আড্ডাঘরে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর