রবিবার, ২৯ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

ভাইরাস প্রতিরোধক কিছু খাবার

ভাইরাস প্রতিরোধক কিছু খাবার

করোনাভাইরাস শরীরে ঢোকার বেশ কয়েকদিন পর এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। বিভিন্ন চিকিৎসক বলেছেন ১৪ দিন গৃহপর্যবেক্ষণে রাখলে সংক্রমণ অনেকটাই রোখা যাবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত করোনাভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক বা টিকা আবিষ্কার হয়নি। যার রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা অনেক বেশি তাকে এই ভাইরাস ক্ষতি করতে পারবে না। তাই বৃদ্ধ এবং শিশুসহ কমবেশি সবার এ ভাইরাস আক্রমণ করার ঝুঁকি রয়েছে। তাই  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় জেনে নিন।

মধু : প্রতিদিন সকালে খালিপেটে এক চামচ মধু সামান্য গরম করে খাবেন। মধুতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গলায় থাকা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। তবে ডায়াবেটিস রোগীরা সকালে অবশ্যই

মধু এড়িয়ে চলবেন।

লেবুর রস : লেবুর রস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই হালকা কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করবেন। এতে এ ভাইরাসের ঝুঁকি কমে যাবে।

গ্রিন টি : এটি এখন অনেকেরই প্রিয়। গ্রিন টিতে ক্যাটেচিন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। গ্রিন টি পান করুন। লেবুর রসের সঙ্গে পানে দ্রুত কাজে দেবে।

আদা ও রসুন : আদা ও রসুনে উচ্চমানসম্পন্ন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম। প্রতিদিন এক কোয়া করে কাঁচা রসুন অথবা ব্লাঞ্চিং করা রসুন খাবেন এবং আদা চা পান করবেন।

কাঁচা হলুদ : দেহে অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। তাই দুধের সঙ্গে রাতে ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে এটি পান করলে ভাইরাস থেকে বাঁচার সমাধান দেবে।

টমেটো : টমেটোয় থাকা পটাসিয়াম, আয়রন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যে কোনো ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। তাই খেতে পারেন।

পানি : দেহে যেমন ফ্লুইড তৈরি করে এবং ইলেকপ্রোলাইটের ব্যালেন্স করে তেমনি এই অকাল সময়ে প্রতিদিন বেশি করে পানি পানে দেহের ভাইরাস ইউরিনেশনের মাধ্যমে অথবা রেচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বের হয়ে আসবে।

মালটার রস : মালটা ধুয়ে কেটে রস খেতে হবে। এর ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট

যা ভাইরাস প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

গাজর : বেটা-ক্যারোটিন নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

পিয়াজ : পিয়াজে বিদ্যমান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সাহায্য করবে।

সবুজ শাক-সবজি : সবুজ শাক-সবজিতে থাকা ক্লোরোফিল নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। তাই এসব খাবার লিস্টে রাখবেন।

কলা : কলা যেমন শরীরের ডিটক্সিফাইং করবে ঠিক তেমনি প্রচুর এনার্জি বাড়াবে।

ক্যাপসিকাম : বিদ্যমান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ভিটামিনস ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

আখরোট : আখরোটে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট

আছে যা ভাইরাস প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়াও শরীর যেন দুর্বল হয়ে না পড়ে তাই অবশ্যই এমন খাবার এই সময়ে খেতে হবে যা খেলে দ্রুত এনার্জি পাওয়া যাবে। যেমন - বাদাম, মিষ্টি আলু, ডার্ক চকোলেট, ডিম,

কলা, দুধ, দই, ব্রাউন রাইস ইত্যাদি। 

এ ছাড়া এ সময় কিছু খাবার আমাদের অবশ্যই এড়িয়ে চলতে হবে। এগুলো নিয়ে কোনো অবস্থাতেই অবহেলা করা ঠিক হবে না। যেসব খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে সেগুলো হলো-

১. ঠান্ডা পানি ও ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার, ২. ওভেনে গরম করা খাবার, ৩. আইসক্রিম, ৪. রাস্তার ধারের খাবার, ৫. দুধ চা, ৬. অতিরিক্ত চিনি ও চর্বি জাতীয় খাবার ইত্যাদি। 

টিপস :  কিছু শুকনো খাবার ঘরে রাখতে পারেন। যেমন-বিস্কুট, খেজুর, বাদাম, ডাল, তেল, মসলা, ছোলা ইত্যাদি। সবকিছু পরিষ্কার রাখতে হবে। বিশেষ করে নিজেকে এবং বাইরের ব্যবহৃত সব জিনিস। প্রতিদিন দুই বেলা গোসল করুন। সম্ভব হলে সামান্য গরম পানি নিন। পানির সঙ্গে স্যাভলন অথবা ডেটল জাতীয় অ্যান্টিসেপটিক লিকুইড মিশিয়ে গায়ে ঢালুন। হাত ও মুখ বেশি করে পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন। বাসার শিশু এবং বৃদ্ধের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হবেন। সবার নখ কেটে রাখবেন। প্রতিদিন ফার্নিচার পরিষ্কার করবেন এবং ঘর মোছার সময় লিকুইড জার্ম কিলার দিয়ে মুছবেন। যারা আগেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তারা নির্দিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে খাবার গ্রহণ করবেন। মনে রাখবেন, প্রতিকার নয় প্রতিরোধই উত্তম।

রুবাইয়া পারভীন রীতি, পুষ্টিবিদ,

ফরাজী হাসপাতাল লিমিটেড, বনশ্রী, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর