ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্য অরুণাচল প্রদেশে জারি হলো রাষ্ট্রপতি শাসন। গতকাল রবিবারই দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অরুণাাচল প্রদেশে রাষ্ট্রপতি শাসনের বিষয়ে সুপারিশ করা হয়। এরপর রাতেই রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় রাষ্ট্রপতি শাসনের নির্দেশিকায় স্বাক্ষর করেন। আজ সোমবার থেকে এই সুপারিশ কার্যকর হয়েছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে কংগ্রেস শাসিত এই রাজ্যটিতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। তৈরি হয় সাংবিধানিক সঙ্কট। রাজ্যটির মোট ৬০ জন বিধায়কের মধ্যে বিজেপির ১১ জন বিধায়কের সঙ্গে বিক্ষুব্ধ ২১ জন কংগ্রেস বিধায়কের সঙ্গে ছিল ২ জন স্বতন্ত্র দলের বিধায়কও। সব মিলিয়ে তাদের শক্তিসংখ্যা দাঁড়ায় ৩৪ এ। ফলে সংখ্যার দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়ে কংগ্রেস। বিক্ষুব্ধ বিধায়করা বিধানসভার স্পিকার নবম রেবিয়াকে সরিয়ে দিতে একটি অস্থায়ী জায়গায় বিধানসভার অধিবেশন বসিয়ে তাকে ইমপিচমেন্টও করেন। গোপনে তার বিরুেদ্ধ একটা ষড়যন্ত্র চলছে সেটা আন্দাজ করে স্পিকার তখনই রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাতেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। একসময় বিক্ষুব্ধ বিধায়করা মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকির ইস্তফার দাবিতেও সরব হয়। পরিস্থিতি যখন চরমে সেই সময় স্পিকার অনুরোধ করেন বিধানসভা ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিতে। একসময় বিষয়টি হাইকোট পর্যন্ত গড়ায়। হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত নেয় যে বিশেষ সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করে সমস্যার সমাধান করার। কিন্তু উপায় না দেখে মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকি ভারতীয় রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে দুইটি চিঠি লেখেন। এরপরই রবিবার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে রাষ্ট্রপতি শাসনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকি বলেন, 'এটা খুবই জঘন্য ঘটনা। এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার আগে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেনি বলেও অভিযোগ করেন টুকি।'
তবে এই সুপারিশের কঠোর বিরোধিতা করেছে কংগ্রেস। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, রাজ্যপালের মাধ্যমে পিছন থেকে কলকাঠি নেড়ে অরুণাচলে কংগ্রেসের সরকারকে ফেলতে চাইছে।
বিডি-প্রতিদিন/২৫ জানুয়ারি ২০১৬/শরীফ