জম্মু-কাশ্মীরের উরি সেনা ক্যাম্পে জঙ্গি হানার পর থেকে নয়া দিল্লি-ইসলামাবাদ সম্পর্ক সাপে-নেউলে অবস্থা। সকল কূটনৈতিক তৎপরতা যেন ব্যর্থ হচ্ছে এখানে। একে অন্যকে কড়া ভাষায় শাসাচ্ছে। অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রের মহড়া চলছে। '৪৭ এর পর থেকে দুই চিরবৈরী দেশ একে অন্যের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেললেও একবিংশ শতকে এই প্রথমবারের মতো ভারত-পাকিস্তান আবারও সংঘর্ষের জন্য প্রস্তুত। আর এই পরিস্থিতিতে একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামতে মুখিয়ে রয়েছে দুই দেশের নয় আকাশকন্যাও। এর মাঝে রয়েছে আকাশ কাঁপানো ভারতীয় তিন নারী বিমানসেনা। পক্ষান্তরে পাকিস্তানের রয়েছে আকাশে আগুন ঝরানো ছয় নারী বৈমানিক।
ভারতীয় বিমান সৈনিক
সম্প্রতি ভারতীয় বিমানবাহিনীর ফাইটার স্কোয়াড্রনে তিন নারীর অন্তর্ভুক্তি ঘটানো হয়েছে। শক্তিতে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম বিমানবাহিনীর ফাইটার পাইলট হলেন অবনি চতুর্বেদি, মোহনা সিং ও ভাবনা কান্থ। রয়েল ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্স থেকে ইন্ডিয়ান এয়ারফোর্সের সুদীর্ঘ ৮৪ বছরের যাত্রাপথে এই তিন নারী বিমান সৈনিকের নাম ইতিহাসে উঠে এসেছে। যেকোনো মুহূর্তে অবনি, মোহনা, ভাওয়ান সরাসরি শত্রুপক্ষকে নাস্তানাবুদ করতে তৈরি। হায়দরাবাদের হাকিমপেট এয়ারফোর্স একাডেমি থেকে পাস আউট করেছেন এই তিন নারী।
অবনি চতুর্বেদি : মধ্য প্রদেশের রেওয়ার বাসিন্দা। বাবা ইঞ্জিনিয়ার। ভাই আর্মির ক্যাপ্টেন। পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য সেনাবাহিনীতে কর্মরত। খুব ছোটবেলা থেকেই বিমান চালানোর ইচ্ছে ছিল অবনির। শেষপর্যন্ত দেশের প্রথম তিন যুদ্ধবিমান চালকের একজন হয়ে নজির গড়েছেন তিনি।
ভাবনা কান্থ : বিহারের দারভাঙ্গা জেলার বাসিন্দা ভাবনা। পরিবারের বড় মেয়ে। লেখাপড়ায় তুখোড় ভাবনা বি টেক শেষ করার পর বিমানবিহনীতে যোগ দেন। ফাইটার পাইলট হিসেবে ভাবনা প্রশিক্ষণ পর্বে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।
মোহনা সিং : গুজরাটের ভদোদরার বাসিন্দা। এয়ারফোর্সে রয়েছেন তার পরিবারের আরও কয়েকজন। বি টেক পাস করা মোহনা এয়ারফোর্সে যোগ দেন। নজির গড়ে নারী ফাইটার চালক হিসেবে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেওয়ার স্বীকৃতি পেয়েছেন।
পাকিস্তানি বিমান সৈনিক
অপর দিকে রয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের ছয় নারী বিমানসেনা। এরা হলেন আয়েশা ফারুক, অম্বরিন গুল, সাবা খান, সায়রা বাতুল, নাদিয়া গুল, ও মরিয়ম খলিল।
আয়েশা ফারুক : পাকিস্তানের অন্যতম ফাইটার প্লেন চালক। বাড়ি ভাওয়ালপুরে। উড়ান প্রশিক্ষণ পর্বে বিশেষ কৃতিত্ব দেখিয়েছেন আয়েশা।
অম্বরিন গুল : ইসলামাবাদের বাসিন্দা। বাবা একটি বেসরকারি কোম্পানির ম্যানেজার। ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে এয়ারফোর্সে যোগ দেন অম্বরিন। প্রশিক্ষণ শেষে যুদ্ধবিমান চালক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন।
সাবা খান : বালোচিস্তানের রাজধানী কোয়েটার বাসিন্দা। পাকিস্তান এয়ারফোর্সের প্রথম নারী ব্যাচের একজন তিনি। সরাসরি আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখেননি তিনি। কাগজে চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে এয়ারফোর্সের পরীক্ষায় আবেদন করেছিলেন। বাকিটা ইতিহাস।
সায়রা বাতুল : উপজাতি হাজারা গোষ্ঠী থেকে উঠে আসা যুদ্ধবিমান চালক সায়রা। দক্ষতা দেখিয়ে নিজের যোগ্যতা জানান দিয়ে পাকিস্তানি নারীদের আইকনে পরিণত হয়েছেন।
নাদিয়া গুল : আরও এক পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান চালক। স্বামী পাকিস্তান আর্মির ক্যাপ্টেন।
মরিয়ম খলিল : পাকিস্তানি নারী যুদ্ধবিমান চালকদের মধ্যে অন্যতম একটি নাম মরিয়ম। পাকিস্তান এয়ারফোর্সের প্রথম নারী ব্যাচের অন্যতম। যোগ্যতা পর্বে কৌশলী যুদ্ধবিমান চালক হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ