আট জনতো দূরের কথা, সার্জিক্যাল অপারেশনে একজন ভারতীয় সেনারও মৃত্যু হয়নি বলে শুক্রবার দৃঢ় ভাবে দাবি করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। এছাড়া এ ঘটনায় পাক টিভি চ্যানেলে দেখানো ছবি ভুয়া এবং এটা পাকিস্তানের কারসাজি বলেও অভিযোগ করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, এই অপারেশন চলাকালীন কেবলমাত্র একজন সেনাই ল্যান্ডমাইনে পা দিয়ে ফেলায় জখম হয়েছেন। আর পাক সেনার হাতে ধরা পড়েছেন যে জওয়ান, তিনি মধ্যরাতের মূল অপারেশনে ছিলেনই না। ভুল করে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে চলে গিয়ে পাক সেনার হাতে বন্দি হয়েছেন তিনি। যাকে ফিরিয়ে আনার সব রকম চেষ্টা চালাচ্ছে ভারত। এই দুই ঘটনা ছাড়া বুধবার সার্জিক্যাল স্ট্রাইক অপারেশনের সময় আর কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি ভারতের।
জঙ্গি দমন করতে বুধবার রাতে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে ভারতীয় সেনা। সেই অপারেশনে চূড়ান্ত সফলও হয় সেনা। কিন্তু ভারত যে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছে তা মানতে নারাজ নওয়াজ শরিফরা। শুরু থেকেই সার্জিক্যাল স্ট্রাইক না বলে এই হামলাকে সীমানার দুই প্রান্তের সেনার মধ্যে গুলির লড়াই বলে চালানোর চেষ্টা চালায় তারা। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে প্রথমে জানানো হয়, এই লড়াইয়ে ২ জন পাক সেনার মৃত্যু হয়েছে। পরে বলা হয় ৮ জন ভারতীয় সেনারও মৃত্যু হয়েছে এবং দু’পক্ষেরই বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। পাক সেনার পক্ষ থেকে শুধু এই তথ্য বিবৃতি দিয়ে জানানোই হয়নি, পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমগুলিতে ‘লড়াইয়ে হত’ ভারতীয় সেনাদের ছবিও দেখানো হয়। শুক্রবার যার তীব্র বিরোধিতা করে ভারতীয় সেনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় সেনার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘‘শহিদ হতে আমাদের জওয়ানেরা কখনও পিছপা হন না। তেমন কিছু ঘটলে স্বীকার করতে কোন দ্বিধা নেই।’’ উল্টো পুরনো প্রসঙ্গ টেনে এনে পাকিস্তানেরই এমন স্বভাব বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, কার্গিল যুদ্ধের সময় যে সমস্ত পাক সেনা মারা গিয়েছিলেন, তাদের কবর ভারতীয় সেনা দিয়েছিল। পাকিস্তান তাদের মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করেছিল। সুতরাং পাকিস্তান বরাবরই সেনার বলিদান ধামাচাপা দিতে চায়। এই অপারেশনে ভারতের কোন সেনা মারা যায়নি।
ভারতের দাবি, একমাত্র এক জন সেনাই বন্দি হয়েছেন। কিন্তু তার মূল অপারেশনের সঙ্গে কোন যোগ ছিল না। চান্দু বাবুলাল চহ্বাণ নামে বন্দি ওই সেনা আসলে ভুল করে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে গিয়েছিলেন। যাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ভারতীয় সেনার ডিজিএমও জেনারেল রণবীর সিংহ বৃহস্পতিবারই হটলাইনে পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলেছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহও চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
বিডি প্রতিদিন/১ অক্টোবর ২০১৬/হিমেল
