এবার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সরাসরি যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। নারীদের অনুমতি ছাড়া গায়ে হাত দেয়া, চুমু খাওয়াসহ আরও নানা হয়রানির অভিযোগ রিপাবলিকান এই পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে। একটি মার্কিন দৈনিকে প্রকাশিত সেই সব অভিযোগ নিয়ে নতুন বিতর্কে রয়েছেন ট্রাম্প।
কয়েক দিন আগেই একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছিল আর এক মার্কিন দৈনিক। সেই ভিডিওতে ট্রাম্পের দাবি, ‘সুন্দরী নারী দেখলেই আমি চুমু খেতে শুরু করি। কোনো রকম অপেক্ষা না করেই। এ যেন চুম্বকের মতো আকর্ষণ।’
তবে এই বক্তব্যের যুক্তিও দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তিনি বলেছিলেন, ‘তুমি যদি তারকা হও, কেউ কিছু মনে করবে না। যা খুশি করতে পারো।’ অবশ্য এসব মন্তব্যের জন্য কয়েক দিন আগেই ক্ষমা চেয়েছেন ট্রাম্প।
যারা, যেসব অভিযোগ এনেছেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে:
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগকারী এক বৃদ্ধা— ৭৪ বছরের জেসিকা লিডস। অভিযোগ, নিউ ইয়র্কগামী একটি বিমানের ফার্স্ট-ক্লাস কেবিনে ট্রাম্পের পাশে বসেছিলেন তিনি। তখন তার বয়স ৩৮ এবং ট্রাম্পের ২৫। ট্রাম্পকে তখন চিনতেনও না ওই নারী। কিছু না বলেই জেসিকাকে জাপটে ধরে তার স্কার্টের নীচে হাত ঢুকিয়ে দেন ডোনাল্ড। জেসিকার কথায়, ‘এমন ভাবে হাত বোলাচ্ছিল, একটা অক্টোপাস মনে হচ্ছিল ওকে। সব জায়গাতেই ওর হাত চলে যাচ্ছিল!’
আর একটা ঘটনা ২০০৫ সালের। একটি রিয়্যাল এস্টেট সংস্থার রিসেপশনিস্ট ছিলেন র্যাচেল ক্রুকস। বয়স ২২। সংস্থার দফতরে লিফটের বাইরে ট্রাম্পের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। প্রথম আলাপে হাত মেলান ট্রাম্প। তারপরেই গালে আর ঠোঁটে চুমু। ‘আমার খুব খারাপ লেগেছিল,’ বলছিলেন র্যাচেল। কয়েকদিন পরে ট্রাম্প ফের তার অফিসে আসেন। তখন মেলানিয়ার সঙ্গে নতুন বিয়ে হয়েছে। র্যাচেলের কাছে ফোন নম্বর চেয়েছিলেন ট্রাম্প। বলেছিলেন, মডেলিং এজেন্সিকে দেবেন। যদিও সেই সংস্থার পক্ষ থেকে কোনো দিন ফোন আসেনি র্যাচেলের কাছে।
নিজেদের এই অভিজ্ঞতার কথা বন্ধু ও আত্মীয়দের কাছে বলেছিলেন জেসিকা ও র্যাচেল। তবে তখন কোনো উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছে বলে ওঠার সাহস পাননি তারা।
আর একটা ঘটনা ১৩ বছর আগের। একটি কনসার্টের শ্যুটিং করছিলেন মাইন্ডি ম্যাকগিলিভর (৩৬)। মাইন্ডির কথায়, ‘হঠাৎ পেছন থেকে একটা আলতো স্পর্শ। চোখ ফেরাতেই দেখি ট্রাম্প। পেছন থেকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করছিলেন উনি।’
একই ধরনের অভিজ্ঞতা সাংবাদিক নাতাশা স্টোয়েনয়ফের। ২০০৫ সালে ডোনাল্ড ও মেলানিয়ার প্রথম বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে তাদের একটি সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলেন এক নামজাদা মার্কিন পত্রিকার সাংবাদিক নাতাশা। তাকে ঘরে একা পেয়ে ‘দেওয়ালের দিকে ঠেলে দিয়েছিলেন ডোনাল্ড। তারপরেই চুমু,’ বলছিলেন নাতাশা। এই অভিজ্ঞতা নিয়ে পরে একটি ‘ফার্স্ট-পার্সন’ রচনাও লেখেন তিনি।
এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প। যে দৈনিকটি এ খবর প্রকাশ করেছে তার বিরুদ্ধে মামলা করার কথাও ভাবছেন তিনি। ওই খবর প্রকাশের পরেই ট্রাম্প শিবিরের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, পুরো খবরটাই কাল্পনিক। কেন এত বছর চুপ করেছিলেন অভিযোগকারীরা, সে প্রশ্নও করা হয়েছে। খবরটি তুলে নেয়ার জন্য ট্রাম্প শিবির থেকে ওই পত্রিকার অফিসে আইনি চিঠিও পাঠানো হয়। তবে পত্রিকাটির দাবি, তারা যথেষ্ট খোঁজ-খবর নিয়েছে। ফলে ট্রাম্প যদি আইনের পথে হাঁটেন, তারাও চুপ করে বসে থাকবে না!
সূত্র: আনন্দবাজার
বিডি প্রতিদিন/১৫ অক্টোবর ২০১৬/হিমেল