প্রবল তুষারপাতে সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কাশ্মীরের জনজীবন। অত্যাধিক তুষারপাতের ফলে দুই দিন ধরে ভারতের অন্য অংশের সঙ্গে উপত্যকার যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গত চারদিন ধরেই উপত্যকার বিভিন্ন অংশে ভারি তুষারপাত শুরু হয়েছে। তাপমাত্রা নেমে গেছে প্রায় মাইনাস ৫ ডিগ্রিতে।
তুষারপাত ও ভূমি ধসের কারণে পরপর দুই দিন ধরে শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়ক বন্ধ। রাস্তার ওপরেই সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ৮ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ও দুই শতাধিক যাত্রীবাহী গাড়ি। আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদেরকে। ভেড়া ব্যবসায়ী গুলাম রসুল জানান ‘আমি প্রায় এক ট্রাক ভেড়া কাশ্মীরে নিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু তুষারপাতের কারণে ট্রাক যেতে না পারায় ব্যবসায় ক্ষতি ছাড়া আর কোন উপায় দেখছি না। কাশ্মীরে একটা ভেড়ার দাম যেখানে ১০ হাজার রুপি পেতাম সেখানে এখন মনে হচ্ছে ১ থেকে ২ হাজার রুপিতে ভেড়াগুলিকে বিক্রি করে দিতে হবে, না হলে ভেড়া গুলি ট্রাকের মধ্যেই মারা যেতে পারে’।
রাজ্য সরকারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন ২৯৪ কিলোমিটার দীর্ঘ জাতীয় সড়ক চলাচলের উপযুক্ত করার চেষ্টা চলছে। আবহাওয়া যদি একটু ভাল হয় তবেই আমরা এই সড়ককে যান চলাচলের জন্য খুলে দিতে পারবো। শ্রীনগর শহরের বিভিন্ন বড় রাস্তাগুলিরও একই অবস্থা। রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা একেবারেই কম। তুষারপাতের কারণে গত শুক্রবার সাম্প্রতিককালে সবচেয়ে ভয়ানক ট্রাফিক জ্যামের সাক্ষী হওয়ার পর কেউই আর এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় সাহস করে বাড়ির বাইরে গাড়ি নিয়ে বের হচ্ছেন না।
রানওয়েতে তুষারপাতের কারণে শ্রীনগর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও গত দুই দিন ধরে বিমান উড়ান পরিষেবা বন্ধ রয়েছে। বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানান রানওয়ে থেকে বরফ সরানোর জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সর্বত্বভাবে চেষ্টা করছে। আমরা আশা করছি, বিকেলবেলায় বিমান চলাচল শুরু করতে পারবো।
তুষারপাতের সঙ্গে সঙ্গেই উপত্যকার বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা বিঘ্নিত, ফলে সমস্যা আরও চরমে উঠেছে। যদিও বিদ্যুৎ দফতরের কর্মকর্তারা জানান, রবিবার সন্ধ্যার মধ্যেই বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে আগামী ২৪ ঘণ্টায় উপত্যকায় আরও বেশি তুষারপাত ও বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মেহেবুবা মুফতি পুরো বিষয়ের ওপর নজর রাখছেন।
বিডি-প্রতিদিন/০৮ জানুয়ারি, ২০১৬/মাহবুব