আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাসংখ্যা বাড়ানো সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল বলে জানালেন বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা।
আগামী ২০ জানুয়ারি সপরিবারে হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নেবেন বারাক ওবামা। তার আগে মার্কিন টিভি চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে নিজের কার্যকাল নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করলেন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত কি ছিল জানতে চাওয়া হয় তাঁর কাছে। সময় নষ্ট না করে জানান, ‘যখন আফগানিস্তানে আরও ৩০,০০০ মার্কিন সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিলাম। তবে ওই পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলাম। আমি প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে পর্যন্ত আফগানিস্তানকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়নি। তালেবানরা ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছিল। ’
উল্লেখ্য, ৯/১১ হামলার পর আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের খোঁজে আফগানিস্তানে বিমান হামলা চালাতে শুরু করে মার্কিন ও ব্রিটিশ যৌথবাহিনী। কান্দাহার উদ্ধার করলেও, মার্কিন সেনার হাত ফস্কে বেরিয়ে যায় ওসামা বিন লাদেন এবং তালেবান নেতা মোল্লা ওমর। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনা পাঠায় ন্যাটো। ২০০২ সালে হামিদ কারজাইয়ের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হলে শান্তি স্থাপনের জন্য সেনা পাঠায় ন্যাটো।
২০০৪ সালে আফগান নির্বাচনে জয়ী হন কারজাই। কিন্তু তারমধ্যেই ফের মাথাচাড়া দেয় তালিবানরা। অশান্ত হয়ে ওঠে কাবুল। শুধুমাত্র ২০০৮ সালে কমপক্ষে ১২০ মার্কিন সেনার মৃত্যুর হয়। মৃত্যু হয় ১০৪ ন্যাটো প্রেরিত সেনার। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে প্রথমে আরও ১৭,০০০ সেনা পাঠাতে সম্মত হন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। কিন্তু অক্টোবর মাসে আরও ৫২ মার্কিন সেনার মৃত্যু হওয়ায় ডিসেম্বর মাসে একধাক্কায় আরও ৩০,০০০ সেনা পাঠানোর ঘোষণা করেন তিনি।
যার ফলে আফগানিস্তানে মোতায়েন মার্কিন সেনা সংখ্যা ১ লাখে দাঁড়ায়। পাশাপাশি যৌথ বাহিনীর ৫০,০০০ সেনাও মজুত ছিল। ২০১৪ সালে কারজাইকে সরিয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন আশরফ গনি। তখন থেকেই সেনা গুটিয়ে নিতে শুরু করে আমেরিকা ও ন্যাটো। সে বছরই আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা-চুক্তি স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট গনি। বলা হয়, ৯৮০০ মার্কিন সেনা সেখানে থাকতে পারবে। জার্মানি, তপরস্ক, ইটালি ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ মিলিয়ে ন্যাটোর প্রায় ১২,০০০ সেনা রাখার অনুমতিও মেলে। গত দু’বছরে বেশ কিছু সেনা দেশে ফিরে যাওয়ার পর, বর্তমানে সেখানে মার্কিন সেনা সংখ্যা ৮,৪০০ রয়েছে।