ভারতের হরিয়ানায় তিন শিশু সন্তানকে খুন করলেন পাষণ্ড বাবা ও চাচা। মেলা দেখাতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে 'পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ' থেকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিল তাদের বুক। হরিয়ানার কুরুক্ষেত্রের এই ঘটনায় পুলিশ বাবা সোনু মালিক এবং তার ভাই জগদীপকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রী, তিন সন্তান সমীর (১১), সিমরান (৮) এবং সমরকে (৫) নিয়ে কুরুক্ষেত্রের বাড়িতে থাকেন সোনু। ওই শহরে তার একটি স্টুডিও রয়েছে। ওই পরিবারের সঙ্গেই থাকেন সোনুর ভাই জগদীপ।
সোনুর স্ত্রী জানিয়েছেন, রবিবার সকালে তিনি বাড়ি ছিলেন না। বিকেলে বাড়ি ফিরে ছেলেমেয়েদের দেখতে না পেয়ে আশপাশের বাড়িতে খোঁজ করেন। সন্ধ্যার পরেও তারা না ফেরায় পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করেন তিনি। ততক্ষণে বাড়ি ফিরে এসেছে সোনু ও জগদীপও।
পুলিশের সঙ্গে তারাও যোগ দেয় তল্লাশি অভিযানে। তদন্তকারী দলের সদস্য এক পুলিশ কর্মী জানিয়েছেন, তল্লাশি চালাতে গিয়ে সোনু এবং তার ভাইয়ের কথায় কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়ে। তাতেই সন্দেহ হয় পুলিশের। এর পর সোমবার তাদের থানায় ডেকে জেরা করে পুলিশ।
জেরায় ভেঙে পড়ে দু’জনেই। পুলিশকে তারা জানায়, রবিবার সকালে তিন শিশুকে মেলা দেখাতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গভীর জঙ্গলে নিয়ে যায় চাচা জগদীপ। সেখানে সমীরকে প্রথমে গাড়ি থেকে নামতে বলে সে। তার পর হেঁটে জঙ্গলের মধ্যে আরও কিছুটা নিয়ে যাওয়া হয় ওই শিশুকে। সেখানেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে সমীরকে গুলি করে সে। ঝাঁঝরা হয়ে যায় ওই শিশুর শরীর। এর পর একে একে বাকি দু’জনকেও একই ভাবে খুন করে সে। ওই তিন শিশুর দেহ সেখানেই ফেলে রেখে বাড়ি চলে আসে জগদীপ।
পরে পুলিশ মঙ্গলবার ওই দুই অভিযুক্তকে সঙ্গে নিয়ে জঙ্গল থেকে তিন শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে।
জেরায় সোনু জানিয়েছে, ভাইয়ের সঙ্গে মিলে সে-ই তিন শিশুকে খুনের ছক কষে। জগদীপ শুধু তার কথা মতো কাজ করেছে। কিন্তু, কেন এই খুন? তা নিয়ে এখনও দ্বন্দ্বে রয়েছে পুলিশ। অভিযুক্তদের বয়ান এবং পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের অনুমান, সোনুর কোনও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। আর তার জেরেই হয়তো এই খুন। তবে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ হরিয়ানা পুলিশ।
বিডিপ্রতিদিন/ ২২ নভেম্বর, ২০১৭/ ই জাহান