জাতীয় নিরাপত্তারক্ষী দিবসে ভাষণ দিতে গিয়েছিলেন তিনি। মঞ্চ থেকেই দেখলেন, একখানা ড্রোন এগিয়ে আসছে তার দিকে। আর মঞ্চের চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সেনাদের দল তৎক্ষণে এদিক ওদিক দৌড়তে শুরু করেছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বেশ কয়েকটা বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এলাকা। অল্পের জন্য রক্ষা পান ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রপতি নিকোলাস মাদুরো।
প্রায় ফিল্মি কায়দায় আক্রমণ করা হয় তার উপর। এক ঝাঁক ড্রোনের মাধ্যমে তার উপর আক্রমণ করা হয়। আক্রমণের পুরো ছবি ওঠে লাইভ ক্যামেরায়।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, মাদুরোকে মেরে ফেলার জন্যই এমন হামলা করা হয়েছে। ভেনেজুয়েলার নিরাপত্তা সংস্থা মনে করছে, অদূর ভবিষ্যতে এমন মারণ হামলা ফের হতে পারে মাদুরোর উপর। এদিন কোনওক্রমে মাদুরো বেঁচে গেলেও সাতজন সেনা ভয়ানক জখম হয়েছেন।
দেশের ৮১তম জাতীয় নিরাপত্তারক্ষী দিবসে সেনাদের উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়েছিলেন মাদুরো। ভাষণ চলাকালে হঠাৎই আকাশের দিকে চোখ যায় সকলের। এমন এক রকম আক্রমণ হতে পারে বলে কেউ আন্দাজও করতে পারেননি।
ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসতে থাকে ড্রোন। আর সব কটাই বিস্ফোরক বোঝাই। রাষ্ট্রপতিকে সম্মান জানানোর জন্য একের পর এক রেজিমেন্টের সেনারা সাড়ি করে দাঁড়িয়েছিলেন। কুচকাওয়াজও চলছিল। কিন্তু আচমকা ড্রোন আক্রমণ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় সেনাদের সারি। ছুটাছুটি করতে গিয়ে অনেক সেনাকর্মীই আহত হন।
প্রাণঘাতী এই হামলার জন্য ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট দায়ী করেছেন কলম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি জুয়ান ম্যানুয়েলকে।
মাদুরো বলছেন, জুয়ান ম্যানুয়েল স্যান্টোস এই হামলার জন্য দায়ী আমি নিশ্চিত। ও একজন কুচক্রী। আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। ও আমাদের দেশের কিছু অশুভ শক্তিকে বাইরে থেকে মদদ জোগাচ্ছে। এদেশের উপর ওর অনেকদিনের নজর রয়েছে।
গত কয়েক বছরে ভেনেজুয়েলার রাজনৈতিক অবস্থা অবনতি হয়েছে প্রচণ্ডভাবে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলেছে আর্থিক সঙ্কট। এক সময় লাতিন আমেরিকার ধনী দেশগুলোর মধ্যে একটা ছিল ভেনেজুয়েলা। কিন্তু গত কয়েক বছরে সরকারের একের পর এক অপ্রয়োজনীয় ও অবৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তে এখন সে দেশের অবস্থা বেশ খারাপ। এমনিতে, ভেনেজুয়েলায় মাদুরোর জনপ্রিয়তা প্রায় নেই বললেই চলে।
হুগো চাভেজের মৃত্যুর পর নিয়ম মেনে দেশের রাষ্ট্রপতির পদ পান মাদুরো। কিন্তু দেশের জনগণের মধ্যে তিনি তেমন একটা জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেননি এখনও।
বিডি প্রতিদিন/০৫ আগস্ট ২০১৮/আরাফাত