ভারতের কেরালা সরকার এবং রাজ্যের বাসিন্দারা ১৫ দিনের এক শিশুকে বাঁচানোর জন্য মানবিকতার এক অনন্য নজির গড়েছেন। হৃদরোগে আক্রান্ত শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৪০০ কিলোমিটার রাস্তা গ্রীন করিডর তৈরি করে অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়া হয় অন্য একটি হাসপাতালে।
জানা যায়, শিশুটি জন্মগতভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত। তাকে উন্নত চিকিৎসা দেয়ার জন্য গ্রীন করিডর তৈরি করে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাওয়া হলো অন্য একটি হাসপাতালে। ৪০০ কিলোমিটার রাস্তা সাড়ে পাঁচ ঘণ্টায় অতিক্রম করে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম আজকাল এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেরালার উত্তর কাসারাগড জেলার একটি হাসপাতালে জন্ম হয় ওই শিশুটির। জন্মের পরই তার হৃদরোগ ধরা পড়ে এবং তাকে ব্যাঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু পরে শিশুটি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। এর ফলে যকৃত ও কিডনি কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
এরপর শিশুটির অভিভাবক সিদ্ধান্ত নেন যে তাকে উন্নতমানের চিকিৎসার জন্য তিরুবন্তপুরমে নিয়ে যাওয়া হবে। যদিও এতে শিশুটির জীবনের ঝুঁকি ছিল। বিষয়টি কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের নজরে আসে এবং তার হস্তক্ষেপে খুব দ্রুত গ্রীন করিডর তৈরি করা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী নিজে ফেসবুকের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে রাস্তায় যানজট সৃষ্টি না করার জন্য অনুরোধ জানান। যাতে অ্যাম্বুলেন্স সহজে চলে যেতে পারে।
যাত্রাপথের মাঝখানে শিশুটির জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এই আশঙ্কায় চিকিৎসকরা শিশুটিকে কোচির বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওযার পরামর্শ দেয় মা-বাবাকে। যাতে কিছুটা সময় বেঁচে যায় এবং শিশুটি চিকিৎসা দ্রুত হয়।
প্রথমে মা-বাবা রাজি না হলেও রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেকে শৈলজা তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং কোচির হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তি করানোর জন্য রাজি করান। রাজ্য সরকার শিশুটির চিকিৎসার ব্যয়ভার গ্রহণ করেছে বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছেন, গ্রীন করিডর সফল হয়েছে পুলিশ, অ্যামুলেন্স চালক এবং চিকিৎসকদের মধ্যে ক্রমাগত সমন্বয়ের ফলে। সাড়ে পাঁচ ঘণ্টায় ৪০০ কিলোমিটার রাস্তা পার হওয়া মোটেও মুখের কথা নয়। শুধু পেট্রোল পাম্পে তেল নিতে থেমেছিল অ্যাম্বুলেন্সটি।
বর্তমানে শিশুটির শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক। তাকে কোচির অমৃতা ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটিকে চিকিৎসকরা দু’দিন পর্যবেক্ষণে রাখবেন। তারপরই পরবর্তী চিকিৎসা শুরু করবেন তারা। খবর আজকালের
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন