সুমেধা বসু, দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। স্বপ্ন ছিল মডেলিংয়ে কাজ করার। কিন্তু এতে বাধা দিয়েছিল পরিবার। আর তাতেই ক্রমশ অবসাদে ডুবে যাচ্ছিল এই কিশোরী। এ কারণে আত্মহত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই মৃত্যুর তদন্তে নেমে কিছু তথ্য তদন্তকারীদের হাতে এসেছে। তবে শুধুই কি মডেলিংয়ে বাবা-মায়ের আপত্তির জেরেই এই ভয়ঙ্কর পরিণতি? নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্যকোনও কারণ, তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। সেই কারণেই খতিয়ে দেখা হবে মেয়েটির কললিস্ট।
জানা গেছে, সুমেধা বসু নেতাজিনগর থানা এলাকায় রানিকুঠির বাসিন্দা। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। এরপর দীর্ঘক্ষণ পেরিয়ে যাওয়ার পরও বাড়ি ফেরেননি। পরে স্থানীয় যুবকরা রাত আটটা নাগাদ রানিদিঘিতে তার মরদেহ ভেসে যেতে দেখেন । প্রথমে এক যুবক তাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। খবর দেওয়া হয় নেতাজিনগর থানায়। খবর পেয়ে পুলিশ ডুবুরি নামিয়ে উদ্ধার করে মরদেহ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দিঘির পাড় থেকেই উদ্ধার হয়েছে স্কুলের ব্যাগ, জুতা ও মোবাইল ফোন। মিলেছে একটি সুইসাইড নোটও। সুইসাইড নোটে ছাত্রীটি লিখেছেন, তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। জীবনে অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল। কিন্তু তা পূরণ হলো না, সেই কারণেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত। সুইসাইড নোটের ভিত্তিতে ওই কিশোরীর পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই প্রকাশ্যে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
কলকাতার একটি নামি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ছাত্রী ওই কিশোরী। তার স্বপ্ন ছিল মডেলিং; লক্ষ্য ছিল মুম্বাইয়ে গিয়ে মডেলিং করবে। কিন্তু বাবা-মা সবসময় তাকে বুঝিয়েছিলেন যে, আগে পড়াশুনো শেষ করতে হবে তাকে। এই নিয়ে বকাঝকাও করেছিলেন। কিন্তু বাবা-মায়ের কথা শুনতে রাজি ছিলেন না তিনি। অনুমান, সেই কারণেই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন তিনি।
মেয়ে এমনটা করতে পারে তা ভাবতেও পারেননি সুমেধার বাবা স্বপন বসু। তিনি গড়িয়ার কামালগাজিতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকে কর্মরত রয়েছেন। মেয়ের আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন তিনি। কিন্তু আদৌ কি শুধুমাত্র মডেলিং করতে পারবে না এই আশঙ্কা থেকেই এই সিদ্ধান্ত? নাকি কোনও বন্ধুর সঙ্গে কোনও ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন সুমেধা? সেই সমস্যার জেরেই এমন পরিণতি? এ ধরনের একাধিক প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে তদন্তকারীদের মধ্যে। তবে মেয়েটির কললিস্ট খতিয়ে দেখলে গোটা বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট হবে বলে মনে করছে পুলিশ।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
বিডি প্রতিদিন/কালাম