লাঠিসোঁটা নিয়ে ভারতের জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটিতে (জেএনইউ) হামলা চালিয়েছে ৫০-৬০ জনের দুষ্কৃতিকারীরা। এ হামলায় ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ গুরুতর আহত হয়েছেন।
রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মুখোশ পরে কয়েকজন যুবক এ হামলা চালায়। এতে মুহূর্তের মধ্যে গোটা ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় ঐশীসহ গুরুতর আহত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা সুচরিতা সেন। ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গছে, মুখোশ, টুপি ও মাফলার বেঁধে ক্যাম্পাসে ঢোকে একদল যুবক। তাদের সবার হাতে লাঠি ছিল। তারা ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ক্যাম্পাসে চিৎকার-চেচামেচি শুরু হয়ে যায়। সবাই এদিক-সেদিক দৌড়াতে থাকে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন ভবন ও গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করতে থাকে।
আহত ঐশী ঘোষ জানান, মুখোশ পরে তাদের ওপর হামলা চালায় দুষ্কৃতিকারীরা। তাকে নির্মমভাবে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয়।
ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অতুল সুদ বলেন, ‘কারা হামলা করেছে, তাদের আমি চিনতে পারিনি। তবে হাতে লাঠি-পাথর নিয়ে একের পর এক হোস্টেলে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছে ওরা। ওদের হাতে বড় বড় পাথর ছিল, যাতে আমাদের অনেকেরই মাথা ফেটে যেতে পারত। এক বার আমি পড়ে যাই। এর পর যখন বাইরে বার হই, দেখলাম আমার গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে ওরা।’’
এই হামলার পেছনে অভিযোগ উঠেছে বিজেপির ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) বিরুদ্ধে। তবে সে অভিযোগ অস্বীকার করে এবিভিপি-র সভাপতি দুর্গেশ কুমারের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘গত দু’মাস ধরে কারা ক্যাম্পাসে অশান্তি ছড়াচ্ছে? ৫০-৬০ জন কি হাজার জনকে মারতে পারে?’’
এ ঘটনায় রীতিমতো হতবাক দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘জেএনইউ-তে সহিংসতার ঘটনায় আমি শক্ড। শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস ভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। পুলিশের উচিত অবিলম্বে এই সহিংসতা থামিয়ে শান্তি ফিরিয়ে আনা। নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই যদি শিক্ষার্থীরা সুরক্ষিত না থাকতে পারেন, তবে দেশের উন্নতি হবে কী করে?’’
ফি বৃদ্ধিসহ কর্তৃপক্ষের একাধিক শিক্ষার্থীবিরোধী নীতির অভিযোগ তুলে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে জেএনইউর শিক্ষার্থীরা।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন