প্রায় পাঁচ মাস চুপ থাকার পর ভারতের ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন’ (সিএএ) ইস্যুতে ফের পথে নামল কয়েক হাজার মানুষ। করোনার আবহের মধ্যেই দেশটির নতুন এই নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার আসামের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদে সামিল হয় বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা। এই বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিল ‘আসাম জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্র পরিষদ’ (এজেওয়াইসিপি)।
রাজ্যটির বিশ্বনাথ জেলায় শিক্ষার্থী সংগঠনের সদস্যরা মানববন্ধনে সামিল হয়ে সিএএ প্রত্যাহারের দাবি জানাতে থাকে। সেই সাথে এনভাইরনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট (ইআইএ)-২০২০’ এর খসড়া প্রত্যহারেরও দাবি জানাতে থাকে।
বিজেপি শাসিত আসাম ও কেন্দ্রের সরকারের বিরুদ্ধেও সুর চড়ায় বিক্ষোভকারীরা। তাদের দাবি মানা না হলেও আগামী দিনে আরও বড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয় বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে।
এজেওয়াইসিপি’এর গুয়াহাটি ইউনিটের প্রেসিডেন্ট প্রদীপ কলিতা জানান ‘সিএএ এবং ইআইএ প্রত্যহার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলতে থাকবে। সিএএ ইস্যুতে যেভাবে আসাম গণ পরিষদেও নেতা অখিল গগৈ-কে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে তাও কোনভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়।’
বিশ্বনাথ জেলা ছাড়াও নওগাঁও, মরিগাঁও, নলবাড়ি, দারাং, শোনিতপুর, জোরহাট জেলার বিভিন্ন প্রান্তেও সিএএ ইস্যুতে প্রতিবাদে নামে সংগঠনের সদস্যরা।
নওগাঁও কলেজের সামনে মানববন্ধনে সামিল হওয়া এক বিক্ষোভকারী জানান ‘আমরা কোন ভাবেই সিএএ ও ইআইএ মেনে নেবো না। ২০১৬ সাল থেকেই আমরা সিএএ’এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চালিয়ে আসছি কিন্ত সরকার আমাদের কথা শুনছে না।’
মরিগাঁও শহরে এজেওয়াইসিপি’এর সাথে হাত মিলিয়ে বিশাল মানববন্ধনে সামিল হয় অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আশু) ও জনজাতি গোষ্ঠীর সদস্যরা।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর ভারতের লোকসভায় পাশ হয় সিএএ। নতুন ওই আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে অত্যাচারিত হয়ে আসা অ-মুসলিম (হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, পার্সি, জৈন) মানুষদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এরপরই এই আইনের প্রতিবাদে গোটা ভারত জুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। আসাম, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক, হায়দরাবাদ, চেন্নাই, পশ্চিমবঙ্গ, নাগাল্যান্ড সহ একাধিক রাজ্যে সহিংসতার চেহারা নেয় সেই বিক্ষোভ। এতে একদিকে যেমন প্রচুর সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়, তেমনি সহিংসতায় একাধিক মানুষের মৃত্যুও হয়।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন