ডিউক অব সাসেক্স প্রিন্স হ্যারি ও তার স্ত্রী মেগান মার্কেলের বিস্ফোরক মন্তব্যের পর ভাবমূর্তি নিয়ে সংকটে পড়েছে ব্রিটিশ রাজপরিবার। ফলে জরুরি বৈঠক করেছেন সেখানকার জ্যেষ্ঠ সদস্যরা।
সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচারের পর করণীয় নির্ধারণেই এই জরুরি বৈঠক। অবশ্য এ বিষয়ে তড়িঘড়ি করে প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রয়োজন মনে করছে না বাকিংহাম প্যালেস।
অনুষ্ঠানের উপস্থাপক অপরাহ উইনফ্রে জানিয়েছেন, হ্যারি-মেগান ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিরুদ্ধে তাদের সন্তানকে নিয়ে যে বর্ণবাদী মন্তব্যের অভিযোগ তুলেছেন, তা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের নয়। অন্যদিকে মেগানের বাবা থমাস মার্কেল বলেছেন, তিনি মনে করেন না ব্রিটিশ রাজপরিবার বর্ণবাদী।
সম্প্রতি মার্কিন উপস্থাপক অপরাহ উইনফ্রেকে সাক্ষাৎকার দেন হ্যারি ও মেগান। গত রবিবার টিভি চ্যানেল সিবিএসে তিন ঘণ্টার সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচারিত হয়। এতে ব্রিটিশ রাজপরিবারে বর্ণবাদ, নিজেদের মানসিক অবস্থা, সংবাদমাধ্যমের চাপ ও রাজপরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে কথা বলেন হ্যারি-মেগান।
সাক্ষাৎকারটি প্রচার হওয়ার পর জরুরি বৈঠকে বসেন রাজপরিবারের সদস্যরা। ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদে নিয়োজিত বিবিসির প্রতিনিধি ড্যানিয়েলা রেলফ বলেছেন, হ্যারি ও মেগান যে অভিযোগ তুলেছেন তা নিয়ে চুপ করে থাকাটা বাকিংহাম প্যালেসের জন্য অনেক কঠিন কাজ। তবে এ নিয়ে কিছু বলার ক্ষেত্রে তারা তাড়াহুড়া করতে চাইছে না।
সাক্ষাৎকারে হ্যারি-মেগান ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিরুদ্ধে তাদের সন্তানকে নিয়ে যে বর্ণবাদী মন্তব্যের অভিযোগ তুলেছেন, তা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের নয় বলে নিশ্চিত করেছেন উপস্থাপক অপরাহ উইনফ্রে। তিনি জানিয়েছেন, কে বা কারা এমন মন্তব্য করেছেন তাদের নাম উল্লেখ করেননি এ দম্পতি। তবে হ্যারি অন্তত এটা নিশ্চিত করেছেন যে এ মন্তব্য তার দাদা-দাদির নয়।
সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় একাধিকবার কেঁদে ফেলেন ৩৯ বছর বয়সী মেগান। তিনি বলেন, “আমাদের অনাগত সন্তানের গায়ের রং কতটা কালো হবে, তা নিয়ে রাজপরিবারে নানা রকমের আলোচনা চলত। এমন কথাও শুনতে পাই যে অনাগত সন্তানকে রাজ-উপাধি কিংবা রাজনিরাপত্তা দেওয়া হবে না। এসব বিষয় আমি হ্যারির কাছ থেকেই শুনেছি।”
মেগানের এ বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তার বাবা থমাস আইটিভিকে বলেন, “রাজপরিবারের সদস্যদের প্রতি আমার যথেষ্ট শ্রদ্ধা আছে। আমি মনে করি না যে ব্রিটিশ রাজপরিবার বর্ণবাদী। আমি মনে করি না, ব্রিটিশরা বর্ণবাদী। আমি মনে করি লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়ার মানুষ বর্ণবাদী; কিন্তু ব্রিটিশরা না।”
থমাস বলেন, অনাগত শিশুর গায়ের রং কেমন হবে বা কতটা কালো হবে, আমি ধারণা ও আশা করছি— এটি কারও কাছ থেকে ছেলেমানুষি প্রশ্ন। বোকামি থেকেই কেউ হয়ত এমন প্রশ্ন করেছে। কিন্তু এটি বর্ণবাদী না। আমার ধারণা, এ ধরনের প্রশ্নের তদন্ত করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় শ্বেতাঙ্গ বাবা আর কৃষ্ণাঙ্গ মায়ের ঘরে জন্ম মেগানের। ২০১৮ সালে হ্যারিকে বিয়ে করেন জনপ্রিয় এই মার্কিন অভিনেত্রী। গত বছরের জানুয়ারিতে রাজপরিবার ছাড়ার ঘোষণা দেয় হ্যারি-মেগান দম্পতি। সূত্র : বিবিসি, এনডিটিভি
বিডি প্রতিদিন/কালাম