২৩ এপ্রিল, ২০২১ ১৬:৪২
বিবিসি বাংলা’র প্রতিবেদন

পশ্চিমা বিশ্বকে বেঁধে দেয়া পুতিনের ‘রেড লাইন’ এর অর্থ কী?

অনলাইন ডেস্ক

পশ্চিমা বিশ্বকে বেঁধে দেয়া পুতিনের ‘রেড লাইন’ এর অর্থ কী?

ভ্লাদিমির পুতিন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এমনিতে স্বল্পভাষী। জনসমক্ষে বাগাড়ম্বর করা বা হুমকি-ধমকি দেওয়ার লোক তিনি নন। কিন্তু বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া তার এক ভাষণে যে ভাষায় তিনি আমেরিকা এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের শাসিয়েছেন, তার নজির বিরল।

ধারণা করা হচ্ছিল বাৎসরিক ওই ভাষণে পুতিন অর্থনীতি, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং কোভিড নিয়েই কথা বলবেন। কিন্তু ৮০ মিনিটের ভাষণের এক পর্যায়ে অনেকটা সময় ধরে তার ধারালো আক্রমণের নিশানা হয়ে ওঠে প্রতিপক্ষ পশ্চিমা দেশগুলো।

তিনি হুঁশিয়ার করেন এই বলে যে, রাশিয়ার সাথে আচরণে কেউ যদি ‘রেড-লাইন‘ অর্থাৎ সীমা অতিক্রম করে, তাহলে তাকে ‘দ্রুত এবং কঠোর’ পরিণতি ভোগ করতে হবে।

এই হুঁশিয়ারি তিনি এমন সময় দিলেন যখন ইউক্রেন সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ এবং বিরোধী নেতা আলেস্কেই নাভালনিকে আটক করা নিয়ে আমেরিকা এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার তীব্র সমালোচনায় লিপ্ত।

জো বাইডেন রাশিয়ার ওপর নতুন করে কিছু নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছেন। তার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট এক সাক্ষাৎকারে পুতিনকে একজন ‘খুনি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন, যা নিয়ে ভীষণ ক্ষেপেছে ক্রেমলিন।

প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার পেছনে 'হন্যে হয়ে লেগেছে'। তিনি বলেন, রাশিয়া এবং দুই সাবেক সোভিয়েত প্রতিবেশী ইউক্রেন এবং বেলারুশের স্থিতিশীলতা “হুমকিতে“ ফেলার চেষ্টা চলছে। অন্যায় নিষেধাজ্ঞার সাথে যোগ হয়েছে আরেকটি বিপজ্জনক বিষয়-বেলারুশে অভ্যুত্থানের চেষ্টা বলে মন্তব্য করেন পুতিন।

গত ১৭ এপ্রিল বেলারুশের সরকার জানায় যে, তারা আমেরিকার যোগসাজশে প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোকে হত্যার একটি ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়েছে। রুশ গুপ্তচর সংস্থা এফএসবি জানিয়েছে, তারা এই ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত দু'জনকে আটক করেছে।

গত বছর বিতর্কিত একটি নির্বাচন নিয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোর সরকারকে সমর্থন দিচ্ছে রাশিয়া। বৃহস্পতিবার দুই দেশের নেতার মধ্যে একটি বৈঠকের কথা রয়েছে। বোঝাই যায়, বেলারুশে কথিত এই অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রের ঘটনায় ক্ষিপ্ত পুতিন।

রেড লাইনের আওতা

রেড লাইন বলতে প্রেসিডেন্ট পুতিন কী বুঝিয়েছেন, সে সম্পর্কে পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “বাইরের দেশে আমাদের নিরাপত্তা স্বার্থ, আমাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তায় নাক গলানো-সেটা নির্বাচন হোক বা অন্য কোন অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়া হোক।’

অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গার পর থেকেই মস্কোর মধ্যে এই সন্দেহ-ভীতি দিনে দিনে জোরদার হচ্ছে যে আমেরিকা এবং তার পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়াকে চিরতরে দুর্বল করে দেওয়ার কৌশল নিয়ে এগিয়ে চলেছে।

বিশেষ করে পূর্ব ইউরোপ এবং সাবেক সোভিয়েত কিছু রাষ্ট্রে নেটো সামরিক জোটের প্রসারকে রাশিয়া তাদের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি বলে মনে করে।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর