বন্দুকের ভয়কে পাত্তা না দিয়ে মিয়ানমারে গণতন্ত্রকামীদের আন্দোলন আরও বেগবান হচ্ছে। যদিও বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি ও ধরপাকড় অব্যাহত রেখেছে সেনাসরকার। দেশটির জান্তাবিরোধী গেরিলা যোদ্ধা ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে মঙ্গলবার ব্যাপক সংঘর্ষের পর একটি গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে সামরিক বাহিনী। এতে অন্তত দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় আড়াইশ' ঘড় বাড়ি নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার মিয়ানমারে নিযুক্ত ব্রিটিশ দূত তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ম্যাগওয়ে অঞ্চলের কিনমা গ্রামের গেরিলা যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। স্থানীয় গেরিলা সংগঠন পিপলস ডিফেন্স ফোর্স পিডিএফের সঙ্গে মঙ্গলবার (১৫ জুন) দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। মূলত সামরিক অভ্যুত্থান ও জান্তা শাসনের বিরুদ্ধে গঠিত হয়েছে সশস্ত্র দলটি। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বেশ কয়েকজন হতাহত হন। এক পর্যায়ে বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্স জানায়, আগুনে গ্রামের প্রায় সব বাড়িই পুড়ে গেছে। আগুনের ভয়াবহতা এত বেশি ছিল যে, নাসার ফায়ার ট্র্যাকিং সিস্টেমে তা রেকর্ড হয়েছে। মিয়ানমার সেনাদের অতর্কিত গুলিতে আগেই গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হন অনেকেই। আগুন দেয়ার পর পুরো গ্রাম জনমানব শূন্য হয়ে যায়। যারা ফিরে এসেছে পোড়া মাটি ও ছাই ছড়া কিছুই খুঁজে পায়নি। খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। মিয়ানমারে নিযুক্ত ব্রিটেনের রাষ্ট্রদূত ড্যান শাগ সাধারণ নাগরিকদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
এদিকে সম্প্রতি দেশটির চিন রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠী দাবি করেছে, মিয়ানমারের ২৭ সেনা নিহত হয়েছে তাদের অতর্কিত আক্রমণে। থান্টল্যাং এবং হাকহা শহর সংলগ্ন এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। মিয়ানমারের নিহত ২৭ সেনার মধ্যে একজন ক্যাপ্টেন র্যাঙ্কের কর্মকর্তা রয়েছে বলেও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে আট শতাধিক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ মিয়ানমারের বাগো শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো ক্র্যাকডাউনে ৮০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছে বলে জানা গেছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার