গ্লাসগো জলবায়ু সম্মেলনে গতকাল বুধবার মধ্যরাতে গ্লোবাল কার্বন প্রোজেক্ট বা বৈশ্বিক গবেষণা প্রকল্প এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কার্বন নিঃসরণের অন্যতম উৎস বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নিয়ে আলোচনা হবে আজ বৃহস্পতিবার।
গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, এ বছর চীনে কার্বন নিঃসরণ বেড়েছে ৪ শতাংশ ও মোট কার্বন নিঃসৃত হয়েছে ১১.১ বিলিয়ন টন, যা বিশ্বের মোট কার্বনের ৩১ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে নিঃসরণ ২০২০ সালের তুলনায় ৭.৬ শতাংশ বেড়েছে, তবে ২০১৯ সালের তুলনায় ৩.৭ শতাংশ নিচে। সেখানে মোট কার্বন নিঃসৃত হয়েছে ৫.১ বিলিয়ন টন, যা মোট নিঃসরণের ১৪ শতাংশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিঃসৃত হয়েছে ২.৮ বিলিয়ন টন, যার মোট নিঃসরণের ৭ শতাংশ। ভারত নিঃসরণ করেছে ২.৭ বিলিয়ন টন কার্বন, যা মোট নিঃসরণের প্রায় ৭ শতাংশ।
কার্বন নিঃসরণ নিয়ে গবেষণা করা বিশ্বের অন্যতম বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী লকডাউনে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন প্রায় ৫.৪ শতাংশ কমেছিল। কিন্তু চলতি বছর তা আবারও ৪.৯ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বছরের শেষ নাগাদ মোট কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ ৩৬.৪ বিলিয়ন টনে পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে। ২০২০ সালে কয়লা ও গ্যাসের ব্যবহার এ বছর আগের মতো বাড়ছে। তবে তেলের ব্যবহার ২০১৯ সালের পর আর বাড়েনি।
বিশ্বের প্রধান কার্বন নিঃসরণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ কভিডপূর্ব অবস্থায় ফিরে গেছে। চীনে কার্বন নিঃসরণের হার কভিডপূর্ব সময়ের চেয়েও বেড়ে গেছে। আর ভারতের নিঃসরণ কভিডপূর্ব সময়ের কাছাকাছি ফিরে আসছে।
এ গবেষণাটির সঙ্গে যুক্ত ছিল যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটার, ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট অ্যাংলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি। গবেষণার সমন্বয়ক এক্সেটার ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক পিয়েরে ফ্রাইডলিংস্টেইন বলেন, 'সারাবিশ্বে কার্বন নিঃসরণ বৃদ্ধির এই প্রবণতা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের প্রবণতা আগের মতোই শুরু হয়েছে। যদিও কিছু দেশ কভিড-পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সবুজ অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করেছে, তবে তা অপর্যাপ্ত।
ইস্ট অ্যাংলিয়া ইউনিভার্সিটির স্কুল অব এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের অধ্যাপক কোরিন লে কোয়েরে বলেন, ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক প্যারিস চুক্তির পর থেকে বিশ্বকে কার্বনমুক্ত করার জন্য অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তাই মহামারি চলাকালীন সময়েও অগ্রগতি ছিল নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে। আর নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ ও শক্তিশালী জলবায়ুনীতিই পারবে জীবাশ্ম জ্বালানি তথা কার্বন নিঃসরণ কমাতে।
সূত্র: কালের কণ্ঠ
বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির