রাসায়নিক দিয়ে ধর্ষককে যৌন মিলনে অক্ষম করার মতো শাস্তির বিধান পাকিস্তানে পাস হওয়া নতুন আইন থেকে শেষ মুহূর্তে বাদ দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় ইসলামিক কাউন্সিলের পরামর্শে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।
প্রস্তাবিত আইনে থাকলেও পাকিস্তানে পাস হওয়া নতুন আইনে শেষ পর্যন্ত ধর্ষককে যৌন মিলনে অক্ষম করার মতো শাস্তির বিধান রাখা হয়নি। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে আইন বষয়ক সংসদীয় সচিব মালেকা বুখারি এই তথ্য নিশ্চিত করেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘আমরা অপরাধ আইন সংশোধন করেছি এবং রাসায়নিক দিয়ে (ধর্ষককে) যৌন মিলনে অক্ষম করার বিধানটি তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
তিনি জানান, আইন পাসের একেবারে শেষ সময়ে রাষ্ট্রীয় ইসলামিক আইডিওলজি কাউন্সিলের (আইআইসি) মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে বিধানটি সংশোধন করা হয়েছে। যৌন মিলনে অক্ষম করার শাস্তি অনৈসলামিক বলে অভিমত দিয়েছে তারা৷ এতে ভোটাভুটির আগ মুহূর্তে নির্দিষ্ট সেই ধারাটি খসড়া থেকে বাদ দেওয়া হয়।
এর আগে গত বুধবার ইমরান খানের সরকার সংসদে তড়িঘড়ি করে তিন ডজন আইন পাস করে। যার মধ্যে ধর্ষণ বিরোধী অপরাধ আইনটিও ছিল। যৌন মিলনে অক্ষম করার শাস্তির বিধান রেখেই আইনটি পাস করা হয়েছে বলে এদিন খবর প্রকাশ করে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা। এই খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলোও বিবৃতি দেয়।
পাকিস্তানে নারী ও শিশুদের উপর যৌন অপরাধের ঘটনা সচরাচরই ঘটছে। বেসরকারি অলাভজনক সংস্থা ওয়ার অ্যাগেইনস্ট রেইপ এর তথ্য অনুযায়ী, মাত্র তিন শতাংশ ক্ষেত্রে অপরাধীকে আদালত সাজা দিয়েছে। ২০২০ সালে একটি হাইওয়েতে ছেলের সামনে এক মা-কে গণধর্ষণের পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুইজনকে ফাঁসি দেন আদালত। তখনই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছিলেন, ধর্ষকদের লিঙ্গচ্ছেদের বা যৌন মিলনে অক্ষম করার মতো শাস্তি দেওয়া উচিত।
পোল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, চেক রিপাবলিক ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কিছু রাজ্যে এমন শাস্তির বিধান রয়েছে। যদিও মানবাধিকারকর্মীরা একে অমানবিক হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ