১৬ জানুয়ারি, ২০২২ ০৯:১০

জেগে উঠেছে সমুদ্রগর্ভে থাকা 'দানব' আগ্নেয়গিরি, সুনামির আঘাত

অনলাইন ডেস্ক

জেগে উঠেছে সমুদ্রগর্ভে থাকা 'দানব' আগ্নেয়গিরি, সুনামির আঘাত

আগ্নেয়গিরি থেকে বের হচ্ছে ধোঁয়া। ছবি: সংগৃহীত।

নতুন বছরেই ধেয়ে আসতে পারে সুনামি। শনিবার (১৫ জানুয়ারী) দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে পানির নিচেই একটি আগ্নেয়গিরি থেকে শুরু হয়েছে অগ্নুৎপাত। হঠাৎ করে আগ্নেয়গিরি জেগে ওঠায় এবং অগ্নুৎপাতের কারণে সুনামির ঢেউ তৈরি হতে শুরু করেছে। এই ঢেউগুলি টোঙ্গা ও জাপানের উত্তর অংশেই আছড়ে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আমেরিকার পশ্চিম উপকূল পর্যন্ত সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে সুনামির ঢেউ-

বিভিন্ন উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে সমুদ্রগর্ভে অবস্থিত হাঙ্গা টোঙ্গা হা’পাই আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত। আকাশে কালে ধোঁয়া ও ছাইও ধরা পড়েছে উপগ্রহ চিত্রে। একইসঙ্গে অগ্নুৎপাতের ফলে আশেপাশের জলে যে শক ওয়েভ তৈরি হচ্ছ, সেটিও দেখা গেছে। অস্ট্রেলিয়ার মেটেরোলজি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, টোঙ্গার রাজধানী নুকু আলোফার কাছে ১.২ মিটার অর্থাৎ প্রায় ৪ ফিট উচ্চতার সুনামির ঢেউ দেখা গেছে।

জাপানের মেটেরোলজিকাল বিভাগও জানিয়েছে যে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে সুনামি পৌঁছাতে পারে। এই ঢেউগুলির উচ্চতা ৩ ফিট পর্যন্ত হতে পারে। ইতিমধ্যে আমামি ওসিমা নামক দক্ষিণের একটি দ্বীপ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ১.২ মিটারের সুনামি ঢেউ আছড়ে পড়েছে বলে জানা গেছে।

আতঙ্কে স্থানীয় বাসিন্দারা-

আগ্নেয়গিরিতে অগ্নুৎপাত শুরু হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন আশেপাশের এলাকার মানুষেরা। টোঙ্গা দ্বীপের বাসিন্দারা সমুদ্রগর্ভে অগ্নুৎপাত শুরু হয়েছে এ কথা টের পেতেই বাড়ি ছেড়ে উচু কোনও জায়গায় আশ্রয় নিতে ছুটেন। এক স্থানীয় বাসিন্দা নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিনিয়ে বলেন, বিশাল বড় একটা ঢেউ আছড়ে পড়ে হঠাৎ। আমরা রাতের খাবারের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, হঠাৎই মাটি কাঁপতে শুরু করে, কেঁপে ওঠে ঘরবাড়িও। এরপরই ঢেউগুলি আছড়ে পড়তে শুরু করে। আমরা ভেবেছিলাম আশেপাশে কোথাও বোমা বিস্ফোরণ হচ্ছে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই বাড়িতে হু হু করে পানি ঢুকতে শুরু করে। আশেপাশের বাড়িগুলির দেওয়াল ভেঙে পড়তে শুরু করলেই আমরা বুঝতে পারি যে সুনামি আসছে। চারিদিকে শুধু মানুষের চিৎকারই শোনা যাচ্ছিল। নিজেদের সুরক্ষিত আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সকলে আর্ত চিৎকার করছিলেন।

জানা গেছে, টোঙ্গার রাজা টুপুই ষষ্ঠকে ইতিমধ্যেই রাজপ্রাসাদ থেকে সুরক্ষিত আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদেরকেও উদ্ধারকার্য় শুরু হয়েছে। যারা উপকূলবর্তী অঞ্চলে থাকেন, তাদেরও উচু কোনও জায়গায় আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।

৮ মিনিটের অগ্নুৎপাত-

মুদ্রগর্ভে অবস্থিত ওই আগ্নেয়গিরি থেকে কমপক্ষে আট মিনিট ধরে অগ্নুৎপাত হয়। ক্রমাগত কালো ধোঁয়া, ছাই ও গ্যাস বের হতে থাকে আগ্নেয়গিরির মুখ থেকে। কয়েক কিলোমিটার আকাশ কেবল ধোঁয়া ও ছাইতেই ঢাকা পড়ে যায়।


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর