ইউক্রেন সীমান্তে সৈন্য কমানোর বদলে বরং আরও বাড়াচ্ছে রাশিয়া-পশ্চিমা বিশ্ব মস্কোর বিরুদ্ধে এমন মারাত্মক অভিযোগ করছে। এমন ‘লোক দেখানো' পদক্ষেপের আড়ালে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন আসলে ইউক্রেন আক্রমণের প্রস্তুতি আরও জোরালো করছেন। অর্থাৎ সে দেশ ‘সামরিক মহড়া'-র শেষে সেনা প্রত্যাহারের যে ঘোষণা করেছে, বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে তা মোটেই খাপ খাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে।
উল্লেখ্য, আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেছেন, যে তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়ার সামরিক ইউনিটগুলো নিজেদের স্বাভাবিক ঘাঁটিতে ফিরে যাবে।
একাধিক দেশ রাশিয়ার বাড়তি তৎপরতার লক্ষণ দেখতে পাচ্ছে বলে দাবি করছে। ব্রিটেনের এক গোয়েন্দা ইউনিটের সূত্র অনুযায়ী আরও সাঁজোয়া গাড়ি, হেলিকপ্টার ও একটা গোটা অস্থায়ী হাসপাতাল স্থানান্তর করতে দেখা গেছে।
মার্কিন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, রাশিয়া গত কয়েক দিনে বাড়তি সাত হাজার সৈন্য ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েন করেছে। তবে তিনি এমন দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণ দেননি।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বলেন, রাশিয়ার কথা ও কাজের মধ্যে কোনো মিল নেই। এস্টোনিয়ার বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র অনুযায়ী, ইউক্রেন সীমান্তে ইতিমধ্যে আনুমানিক এক লাখ ৭০ হাজার রুশ সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে। আরও দশটি সামরিক ইউনিট সেখানে আনা হচ্ছে। সে দেশের এই সংস্থার প্রধান মিক মারান মনে করছেন, ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে বোমা বর্ষণ করে রাশিয়া ইউক্রেনের কিছু অংশ দখল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মোট কথা রাশিয়া কোনো ভূমিকা ছাড়াই আচমকা হামলা শুরু করতে পারে বলে পশ্চিমা বিশ্ব আশঙ্কা করছে।
এমন হুমকির মুখে সামরিক জোট ন্যাটোও তৎপরতা বাড়াচ্ছে। বুলগেরিয়া, রুমেনিয়া, হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ায় নতুন সামরিক ইউনিট মোতায়েনের পরিকল্পনা চলছে। পোল্যান্ড ও বাল্টিক সাগরের দেশগুলিতে আগেই এমন ‘কমব্যাট ইউনিট' পাঠানো হয়েছে। সংঘাত শুরু হলে এমন ইউনিটের সৈন্যরা দ্রুত প্রতিরোধ চালাতে পারবে এবং বাড়তি সৈন্য পাঠানোর জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যাবে।
জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিনে লামব্রেশট বলেন, দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তিতে পূর্ব সীমান্তে ন্যাটো আরও সক্রিয় হবার কথা ভাবনা-চিন্তা করছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। ইউক্রেনও রাশিয়ার সহযোগী দেশ বেলারুশ সীমান্তে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আরও সৈন্য মোতায়েন করছে। গোটা দেশে সামরিক মহড়া চলছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বুধবার টেলিফোনে ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। উত্তেজনা কমাতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাবার পাশাপাশি তারা অ্যাটলান্টিকের দুই প্রান্তের মধ্যে সমন্বয় চালিয়ে যাবার গুরুত্ব তুলে ধরেন। দুজনেই মনে করেন, যে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার ঝুঁকি এখনো দূর হয়নি। শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে এলে সে বিষয়ে আরও আলোচনা হবার কথা। সূত্র: ডয়চে ভেলে
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত